সমাজের কথা ডেস্ক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন। নির্বাচন সামনে রেখে সারাদেশে এলাকাভিত্তিক দাগি ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যেই অনেকে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে পুরনা গ্রুপকে সংঘবদ্ধ করছে। একইভাবে আন্ডারওয়ার্ল্ড আবার অশান্ত হয়ে উঠছে। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কয়েকজন কারাগারে বসে কিংবা বিদেশে পলাতক থেকেই রাজধানীকে নিয়ন্ত্রণের নামে অশান্ত করার চেষ্টায় লিপ্ত। দীর্ঘদিন জেল খেটে জামিনে বেরিয়ে নতুন গ্রুপ তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। এর বাইরে ঢাকাসহ শহরগুলোতে বেপরোয়া কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরাও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছে। এদের নির্বাচনে কাজে লাগাতে কোনো কোনো রাজনৈতিক নেতা প্রশ্রয় দিচ্ছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো দাবি করছে। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এলাকাভিত্তিক সন্ত্রাসীদের তালিকা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
এই তালিকায় কারাগারে এবং বাইরে থাকা সন্ত্রাসীদের নাম থাকবে। একইভাবে নির্বাচনের পূর্বাপর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও রাজনৈতিক দলের ক্যাডারদের নতুন করে তালিকা তৈরির পাশাপাশি তাদের ও পৃষ্ঠপোষকদের গতিবিধির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া আগামী মাসে দেশে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হতে পারে বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্র জানিয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচনকেন্দ্রিক উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতির ফায়দা লুটতে পেশাদার অপরাধী বা অবৈধ অস্ত্রের চক্রগুলো নড়াচড়া শুরু করেছে। সীমান্তের অরক্ষিত কিছু এলাকাসহ বিভিন্ন কৌশলে বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র প্রবেশ করানো হচ্ছে।
<< আরও পড়ুন >> দেশে হেরোইন ঢুকছে নতুন অবয়বে
দেশের দক্ষিণ—পশ্চিম অঞ্চলে অতীতে র্যাব—পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে চরমপন্থি সংগঠনের শীর্ষ নেতারা নিহত হলেও তাদের অস্ত্রভাণ্ডার রয়ে গেছে সুরক্ষিত। ফলে মাঠ পর্যায়ে ক্যাডাররা ওই অস্ত্র ব্যবহার করে ইউপি নির্বাচনে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চাইছে। এ কারণে নির্বাচনের সময় বা এর আগে খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরসহ দক্ষিণ—পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে প্রার্থী কিংবা তাদের কর্মীরা গণহারে খুন হতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
আগামী জানুয়ারি মাসের শুরুতে দেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। যদিও নির্বাচন কোন প্রক্রিয়ায় হবে সেটা নিয়ে সরকারি ও বিরোধী দলগুলোর বিরোধ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। আগামী দিনগুলোতে রাজনৈতিক সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় নির্বাচনের প্রস্তুতি পুরোদমে নিচ্ছে। প্রতিবারই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা করা হয়। এবারও নির্বাচনের আগে দেশে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতোমধ্যে তাদের তৎপরতা শুরু করেছে।