ক্রীড়া ডেস্ক : বেশ কয়েকদিন কানাঘুষার পর নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপঅবশেষে বাংলাদেশ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বিবেচনায় নিয়ে এমন সিদ্ধান্ত বলে জানা গেছে। টুর্নামেন্টটি আগামী ৩-২০ অক্টোবর সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরিয়ে নিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা আইসিসি।
এর আগে আইসিসি বাংলাদেশ থেকে টুর্নামেন্টটি সরিয়ে নেওয়ার তোড়জোড় শুরুর পর আজ ২০ আগস্ট পর্যন্ত সময় চেয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। সেই ডেডলাইন শেষ হওয়ার দিনে সভায় বসে আইসিসি। এর আগপর্যন্ত বিসিবি থেকে বাংলাদেশেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের আশ্বাস দেওয়া হচ্ছিল। সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেছিলেন, ‘এটা আয়োজন করতে পারা আমাদের জন্য একটা ভালো মাইলফলক হবে। যেহেতু বাংলাদেশ একটা সংকটকাল পার করছে, একই সঙ্গে যারা আমাদের মেহমান হয়ে আসবে, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও আমাদের দায়িত্ব। সবকিছু বিবেচনায় এটা শুধু ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, রাষ্ট্রীয় বিষয়।’
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারত, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মতো দেশগুলো বাংলাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছিল। নারী ক্রিকেটের বড় দল অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যালিসা হিলি মঙ্গলবার বলেছিলেন, ‘এই মুহূর্তে সেখানে (বাংলাদেশে) খেলাটা আমার কাছে মনে হয় কঠিন হবে, একজন মানুষ হিসেবে আমার মনে হয় এটা ভুল হতে পারে। যেসব মানুষ মারা যাচ্ছে, তাদের সহায়তায় এখন সবাইকে প্রয়োজন। বাংলাদেশে একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজনের চেয়ে বড় ব্যাপার ঘটছে নিশ্চিতভাবে। তবে এটি আইসিসির ওপর ছেড়ে দেবো আমি।’
আইসিসির প্রধান নির্বাহী জিওফ অ্যালার্ডিস এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'বাংলাদেশে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন না করাটা লজ্জাজনক, কারণ আমরা জানি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) একটি স্মরণীয় টুর্নামেন্টের আয়োজনের সক্ষমতা রাখে।'
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে ইভেন্টটি আয়োজনের চেষ্টা এবং সক্ষম করার জন্য সব উপায় অবলম্বন করার জন্য আমি বিসিবিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তবে অংশগ্রহণকারী কয়েকটি দলের সরকারের ভ্রমণ পরামর্শের অর্থ এটি সম্ভব ছিল না। তবে, আয়োজনের অধিকার বাংলাদেশেরই থাকবে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে একটি আইসিসি গ্লোবাল ইভেন্ট নিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় আছি।'
টুর্নামেন্টটি আয়োজনে ভারতীয় বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আইসিসি। কিন্তু আবহাওয়ার কারণ দেখিয়ে বিসিসিআই তা নাকচ করে দেয়। এরপর জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কাও আগ্রহ প্রকাশ করেছিল টুর্নামেন্টটি আয়োজনে। তবে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে বেশ কয়েকটি কারণে আদর্শ পছন্দ হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছিল, বিশেষ করে এর অনুকূল আবহাওয়া এবং বাংলাদেশের সময়ের সাথে সামঞ্জস্যতার জন্য। অবশ্য আরব আমিরাতে আয়োজিত হলেও বিশ্বকাপের অফিশিয়াল আয়োজক হিসেবে বাংলাদেশের নামই থাকবে।