৮ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নামাজের যত শারীরিক উপকারিতা
293 বার পঠিত

সমাজের কথা ডেস্ক : নামাজ প্রত্যেক মুমিনের জন্য ফরজ ইবাদত। এটি প্রত্যেক মুসলমানেরই পড়তে হয়। ঈমানের পরেই আল্লাহ নামাজের কথা বলেছেন। আল্লাহর সাথে বান্দার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হল নামাজ।

তাই নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়লে বান্দা আল্লাহর কাছে অনেক প্রিয় হয়ে উঠে। কুরআনে বলা আছে, যারা আল্লাহ্র কিতাব পাঠ করে, নামায কায়েম করে, এবং আমি যা দিয়েছি তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসা আশা কর, যাতে কখনও লোকসান হবে না — সূরা ফাতির, আয়াতঃ ২৯।

নামাজ মুসলিমদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত কারণ কুরআনে নামাজের কথা ৮২ বার বলা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কর্ম থেকে বিরত রাখে। ‘ (সুরা—২৯ আনকাবুত, আয়াত: ৪৫)

মুমিন ব্যক্তি রোজ পাঁচওয়াক্ত নামাজ আদায় করে — ফজর, যোহর, আছর, মাগরিব এশা।

সময়মত ও নিয়মিত নামাজ পড়লে আল্লাহ ঐ বান্দাকে সব থেকে বেশি পছন্দ করে এবং তাকে সবধরণের বিপদআপদ থেকে রক্ষা করে। সুতরাং নামাজের গুরুত্ব যে অপরিসীম তা এ দ্বারা প্রমাণিত।

কিয়ামতের দিন বান্দার কাছ থেকে তার নামাজের হিসাব নেওয়া হয়। যারা নিয়মিত নামাজ পড়ে তাদের অন্যান্য হিসাব সহজ হয়ে যাবে এবং তারা সহজে জান্নাতে যেতে পারে। আর আমরা জানি, নামাজ বেহেশতর চাবি। আর হাদিসে আছে নামাযের হিসাব সঠিক হলে তার সমস্ত জবাব সঠিক হবে, আর নামাজের হিসাব বেঠিক হলে তার সমস্ত আমল বরবাদ হবে। —আবু দাউদ।

যারা নিয়মিত নামাজ পড়ে তারা আল্লাহকে ভালবাসে, আল্লাহর ইবাদাত করতে পছন্দ করে। নিয়মিত নামাজের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর অনেক কাছে চলে আসে। নামাজে যখন বান্দা দাড়ায় তখন সে তার সব মনোযোগ তার রবের সামনে তুলে ধরে এর মাধ্যমে বান্দার তার রবের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ পায়।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মাধ্যমে বান্দা শারীরিক ব্যায়াম ও মানসিক শান্তি লাভ করে। তবে ব্যায়াম নয়, নামাজ আদায় করতে হবে ইবাদত হিসেবে। নামাজ আদায়ের মূল উদ্দেশ্য আল্লাহতায়ালার আদেশ পালন, তাকওয়া এবং তার নৈকট্য অর্জন। নিশ্চয় এর মাঝে বান্দার জন্য শারীরিক, মানসিকসহ সব ধরনের কল্যাণ নিহীত।

সে তার দুনিয়াবি সব খেয়াল বাদ দিয়ে একাগ্র মনে রবের নিকট তার সমস্যার সমাধান চায়। কুরআনে বলা আছে “ধৈর‌্যের সাথে সাহায্য প্রার্থনা কর নামাযের মাধ্যমে। অবশ্য তা যথেষ্ট কঠিন। কিন্তু সে সমস্ত বিনয়ী লোকদের পক্ষেই তা সম্ভব” — সূরা আল বাকারা, আয়াতঃ ৪৫।

এছাড়া মুমিন ব্যক্তি জানে নিয়মিত নামাজ না পড়লে কি ভয়াবহ শাস্তি রয়েছে তাদের জন্য। ভয়াবহ শাস্তি হিসেবে জাহান্নাম রয়েছে যেখানে রয়েছে আগুনের উওাপ। তাই এ শাস্তি থেকে বাচঁতে মুমিন ব্যক্তি থেকে নিয়মিত নামাজ পড়তে হবে।

নামাজ প্রসঙ্গে নবী করিম (সা.) বলেন, ‘তুমি যখন নামাজে দাঁড়াও তখন মনে করো যে, তুমি আল্লাহকে দেখছ; আর আল্লাহ তোমাকে দেখছে। তুমি যদি আল্লাহকে নাও দেখো তবে আল্লাহ তোমাকে দেখছেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। ’

নামাজের মাধ্যমে শারীরিক ব্যায়াম:

নামাজ নিয়মিত পড়লে মুমিন ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক উন্নতি হয়। কারণ নিয়মিত নামাজ পড়লে আমাদের মন যেমন সতেজ হয় তেমনি শারীরিক ব্যায়াম ও হয়। নিম্নে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়লে কী কী শারীরিক ব্যায়াম হয় তা দেওয়া হল:

মনোযোগ বৃদ্ধি: নামাজে যখন বান্দা দাড়ায় সে তখন তার সবটুকু মনোযোগ সিজদাহ তে দিয়ে থাকে। তার দুচোখ সিজদাহতে দেয়ার কারণে বান্দার মনোযোগ শক্তি বৃদ্ধি পায়।

হাড় ও কোমরের ব্যাথা উপশম: নামাজে যখন বান্দা রুকু তে যায় সে তার পিঠ ও মেরুদণ্ড সোজা রাখার চেষ্টা করে এবং রুকু দিয়ে আবার সোজা হওয়া এতে বান্দার কোমর ও হাটুর ভারসাম্য রক্ষা হয় এবং ব্যায়াম হয় যার কারণে কোমর ও হাড়ের ব্যাথা কমে যায়।

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি: নামাজে যখন আমরা সিজদাহ্ দিয়ে থাকি তখন আমাদের শরীর থেকে রক্ত মস্তিষ্কে প্রবাহিত হয় যার কারণে আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়ে এবং আমরা সহজে সব কিছু মনে রাখতে পারি।

অজুর মাধ্যমে নিরাপত্তা: মুমিন ব্যাক্তি দৈনিক পাঁচ বার অজু করাতে তার শরীর থেকে জীবাণু চলে যায়। এবং শরীর পাক পবিত্র হয়ে উঠে। অজুর মাধ্যমে শরীরে মাসাহ করাতে শরীরে রক্ত সরবরাহ বাড়ে।

মুখের সৌন্দর্য বৃদ্ধি: নিয়মিত অজু করাতে মুমিন ব্যাক্তির মুখ ম্যাসাজ করাতে মুখে রক্ত সন্চ্জালন বাড়ে এবং মুখের নূর সৃষ্টি হয়। মুখের বলিরেখা, ব্রণ ও দাগ কমে। কিয়ামতের দিন অজুর মাধ্যমে ঐ বান্দাকে চেনা যাবে কারণ ঐ বান্দার চেহারা সবার থেকে আলাদা হবে।

মাংস পেশি সচল: নিয়মিত পাঁচ বার নামাজে দাড়াঁলে শরীরের পাঁচ বার ব্যায়াম হয়। শরীরে উঠানামা করাতে সব পেশী সচল থাকে এবং এতে সব ধরণের রোগ বালাই নিয়ন্ত্রণ থাকে।

<< আরও পড়ুন >> দুনিয়াতেই জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছেন যারা

নামাজের অন্যান্য উপকারীতা:

নিয়মিত নামাজ পড়াতে মুমিন ব্যক্তি নিজেকে সকল ধরণের পাপ ও অসামাজিক কাজ থেকে বিরত রাখে যার কারণে তার মনে প্রশান্তি আসে। সে তার জীবনে সাফল্য লাভ করে। এবং এতে মুমিন ব্যক্তির জীবনে উন্নতি আসে।

নিয়মিত নামাজ পড়লে বান্দা সকল প্রকার গোনাহের কাজ করতে ভয় পায় এবং তার মধ্যে সবসময় আল্লাহকে খুশি রাখার চেষ্টা থাকে। নামাজের মাধ্যমে বান্দা তার মনের কথা আল্লাহকে বলাতে তার মধ্যে সকল ধরণের দুশ্চচিন্তা ও হতাশা দূর হয়। সে মুমিন বান্দা জানে আল্লাহ যা করবে বান্দার ভালোর জন্য করবে। একারণে সে শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ থাকে।

সবশেষে, বলা যায় যে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মাধ্যমে বান্দা শারীরিক ব্যায়াম ও মানসিক শান্তি লাভ করে। তবে ব্যায়াম নয়, নামাজ আদায় করতে হবে ইবাদত হিসেবে। নামাজ আদায়ের মূল উদ্দেশ্য আল্লাহতায়ালার আদেশ পালন, তাকওয়া এবং তার নৈকট্য অর্জন। নিশ্চয় এর মাঝে নিহিত রয়েছে বান্দার জন্য শারীরিক, মানসিকসহ সব ধরনের কল্যাণ।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram