নড়াইল ও লোহাগড়া প্রতিনিধি : মধ্যযুগীয় কায়দায় নড়াইলের লোহাগড়ায় আট মাসের শিশু সন্তানকে গাছে ঝুলিয়ে নিমর্ম নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে পিতার বিরুদ্ধে। উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ অভিযুক্ত বাবা মামুন শেখকে (৩৬) গ্রেফতার করেছে। তাকে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামুনের প্রথম স্ত্রী কুলসুম বেগম গত সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাদী হয়ে স্বামীসহ সতীনের বিরম্নদ্ধে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। শিশু সন্তানকে গাছে ঝুলিয়ে হত্যাচেষ্টার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, লোহাগড়ার রঘুনাথপুর গ্রামের মামুন শেখ তার প্রথম স্ত্রী কুলসুম বেগমের অমতে মাফুজা আক্তার সাথী নামে এক মহিলাকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় বিয়ের পর মামুন তার প্রথম স্ত্রী কুলসুমসহ তিন সšত্মানকে ভরণ-পোষণ না দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন।
এ ঘটনার জের ধরে গত সোমবার দুপুর ২টার দিকে এক লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে কুলসুমকে স্বামী মামুন লাঠি দিয়ে বেদম মারধর করেন। এ সময় সতীন মাফুজা আক্তার সাথী গলা চেপে শ্বাসরোধে কুলসুমকে হত্যার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে মামুন কুলসুম বেগমের আট মাসের শিশু সন্তান আল হাবিবকে ঘর থেকে তুলে এনে আম গাছের ডালে মাথা নিচের দিকে দিয়ে পায়ে রশি বেঁধে ঝুলিয়ে নির্মম নির্যাতন চালায়।
কুলসুম বেগম ও তার শাশুড়িসহ প্রতিবেশিরা শিশু হাবিবকে রক্ষা করতে গেলে মামুন শেখ তাদেরও মারপিট করাসহ ভয়ভীতি ও হুমকি দেন। এ ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ অভিযুক্ত বাবা মামুন শেখকে গ্রেফতার করে।
কুলসুম বেগমের ১৩ বছরের দাম্পত্য জীবনে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। এদিকে, এ ঘটনায় বিভিন্ন মহলে নিন্দার ঝড় উঠেছে। সবাই অভিযুক্ত মামুন শেখের কঠিন শাস্তির দাবি করেন।
লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় শিশুর মা কুলসুম বেগম মামলা করেছেন। মামলা নং-১৯। আসামি মামুন শেখকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং অন্য আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।