নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পেড়লী গ্রামে আজাদ শেখ হত্যাকান্ডে গত ৩ মাসে আসামিপক্ষের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুরুষশূন্য পরিবারের নারী, শিশু ও বৃদ্ধ সদস্যরা অত্যাচার—নির্যাতনের ভয়ে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।
কালিয়া উপজেলার পেড়লী গ্রামের সালাম শেখের ছেলে আজাদ শেখকে (৩৫) গত ২০ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পেড়লী খানকাপাড়া চৌরাস্তা মোড়ে প্রতিপক্ষের লোকজন পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করার পর রাত ৯টার দিকে মারা যান।এ ঘটনায় মৃত আজাদ শেখের ছোট ভাই সাজ্জাদ শেখ বাদি হয়ে ২০জনের নাম উলে¬খ করে ২৩জুলাই কালিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার ১নং আসামি শহিদুল মোল্যা অভিযোগে জানান,২০১৭ সালের ২৫ মে নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার কালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ—সভাপতি মধ্যপেড়লীর বাসিন্দা ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মোফাজ্জেল শেখ হত্যা মামলার আসামি ছিলেন আজাদ শেখ।
এ মামলায় আজাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও আসামি। মোফাজ্জেল হত্যাকান্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে আজাদ শেখ খুন হতে পারেন। ঘটনার দিন তিনি একটি মামলার স্বাক্ষী দিতে নড়াইলে ছিলেন। এদিন বিকেল ৪টার দিকে পেটে ব্যাথাজনিত কারণে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে ডাক্তারের পরামর্শে তিনি নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি হন।
আজাদ হত্যাকান্ডের পর রাতে বাদি পক্ষের লোকজন তার বাড়িতে থাকা নগদ টাকা,স্বর্ণালংকার,গরু,জমির দলিলসহ মূল্যবান জিনিস লুটপাট করে নিয়ে যায়। তার স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা হালিমা খানম বাদিপক্ষের লোকজনের হুমকির মুখে রয়েছেন। ছেলে হুসাইন আহমেদ পেড়লী হাবিবুল আলম বীর প্রতীক কলেজ থেকে এবছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা থাকলেও প্রাণভয়ে পরীক্ষা দিতে যেতে পারেনি।
অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়,আজাদ হত্যাকান্ডকে পুঁজি করে পেড়লী গ্রামের মফিজুল,কামাল হোসেন,বায়েজীদ মোল্যা,জাহাঙ্গীর মোল্যা, মুসাব্বীর গোলাম মওলা,কবির মোল্যাসহ প্রায় একশ পরিবারের বাড়িঘরে,লুটপাট চালানো হয়েছে। ঘটনার পর পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
মামলার বাদি সাজ্জাদ শেখ জানান, আসামিদের বাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় আমাদের লোকজনের কোন সম্পৃক্ততা নেই। আমার ভাই আজাদ হত্যাকান্ডে জড়িতদের আইনগতভাবে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য অপেক্ষায় আছি। আশাকরি ন্যায্য বিচার পাবো।
কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ তাসমীম আলম জানান, পেড়লী গ্রামে বর্তমানে শান্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। আজাদ শেখ হত্যা মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে কেউ অরাজকতা সৃষ্টির মাধ্যমে আইন—শৃংখলার অবনতির চেষ্টা করলে তাকে ছাড় দেয়া হবে না।