সমাজের কথা ডেস্ক : দেশে নতুন অবয়বে ঢুকছে হেরোইন।
নিউ সাইকো—অ্যাক্টিভ সাব্স্ট্যান্সেস—এনপিএস দেখতে চায়ের পাতার মতো। এটি বিমানবন্দর হয়ে দেশে ঢুকত ‘গ্রিন টি’ নামে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) হাতে ধরা পড়ার পর বেরিয়ে আসে আসল সত্য। এটি চা—পাতা নয়; মাদক। জব্দের আগে এ মাদক নিয়ে কোনো সংস্থার ধারণা ছিল না। আরেক মাদক ‘হেরোইন’ পাউডার— এটিই এতদিন জেনে এসেছে সবাই। তবে এবার রূপ পাল্টেছে হেরোইনের। এর সঙ্গে পরিচিত নন খোদ ডিএনসির কর্মকর্তারাও।
সম্প্রতি ডিএনসির অভিযানে কক্সবাজারের টেকনাফে ইয়াবার সঙ্গে পাওয়া জমাট বাঁধা ওই বস্তু রাসায়নিক পরীক্ষাগারে নেওয়ার পর জানা যায়, সেটি হেরোইন। এতে নড়েচড়ে বসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ডিএনসিসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা। পাউডার হেরোইনের চেয়ে অন্তত ১০ গুণ ক্ষমতাসম্পন্ন জমাট বাঁধা হেরোইন। মিয়ানমার থেকে নতুন অবয়বে দেশে ঢুকছে এ মাদক। সব সংস্থার চোখ ফাঁকি দিতে এটি কারবারিদের একেবারেই নতুন কৌশল।
ডিএনসির কর্মকর্তারা বলছেন, কারবারিরা মাদক পাচারে নিত্যনতুন কৌশল নিচ্ছে; এটা অজানা নয়। চালান ধরা পড়ার পর ফের ভিন্ন কৌশল কষতে থাকে তারা। তবে হেরোইন এভাবে জমাটবদ্ধ করে দেশে ঢোকানো যায়, তা ধারণার বাইরে।
<< আরও পড়ুন >> ‘দু’রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীর মাধ্যমে আসে অর্ধকোটি ইয়াবা’
জানা যায়, গত ২৪ সেপ্টেম্বর টেকনাফের পশ্চিম গোদার বিল গ্রামের শাহেদ ওরফে সাজেদের বাড়িতে অভিযান চালায় ডিএনসির টেকনাফ বিশেষ জোন। তাদের কাছে তথ্য ছিল— ওই বাড়িতে বিপুল সংখ্যক ইয়াবা মজুত আছে। অভিযান চালিয়ে ৫৩ হাজার পিস ইয়াবা, চারটি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১৪১ রাউন্ড গুলি জব্দ করে আভিযানিক দল। ইয়াবার পাশে পলিথিন প্যাকেটে থাকা সাদা রংয়ের জমাট বাঁধা বস্তুটি নাকে শুঁকে কর্মকর্তাদের মনে হয়েছিল, এটি হেরোইন বা এমফিটামিন হতে পারে।
অস্ত্র ও ইয়াবার পাশে পাওয়ার কারণে এটি জব্দ করা হয়। চ্যাপটা চারকোণা আকৃতির ওই বস্তুটির ওজন ৭০০ গ্রাম। আসলে বস্তুটি কী, নিশ্চিত হতে কক্সবাজার থেকে ঢাকায় ডিএনসির রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। পরীক্ষার পর জানা যায়, এটি হেরোইন।
ডিএনসির প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক ড. দুলাল কৃষ্ণ সাহা জানান, জমাট বাঁধা অবস্থায় কখনও হেরোইন দেখেননি তিনি। দেশে এটাই ধরা পড়া প্রথম চালান। তিনি বলেন, পাশের দেশ থেকে যে হেরোইন বাংলাদেশে ঢোকে, এর সবই বাদামি রংয়ের পাউডার।
তাতে সর্বোচ্চ ৫—১০ শতাংশ হেরোইন (ডাইএসিডাইল মরফিন) থাকে; বাকিটা অপদ্রব্য (গুল, সাদা পাউডার, চক পাউডার)। তবে মিয়ানমার থেকে আসা জমাটবদ্ধ যে হেরোইন ধরা পড়ছে, এতে প্রায় ৫০ শতাংশ হেরোইন পাওয়া গেছে।