সমাজের কথা ডেস্ক : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রায় ৯ বছর পর ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন। রবিবার (১১ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি গিয়ে তিনি তার দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দেশে কর্তৃত্ববাদের কোনও জায়গা হবে না। ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন রক্তস্নাত বিপ্লবের মাধ্যমে পাওয়া বিজয়কে অর্থবহ করতে হবে। দেশকে প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে উপহার দিতে হবে।’
‘অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র থেকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে’ উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। দল-মত নির্বিশেষে গণতন্ত্রের সুফল দেশের মানুষকে ভোগ করতে হবে।’
তার আহ্বান, ‘বাংলাদেশ একটি আইনের শাসনের রাষ্ট্র তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে হবে। স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে যেন সবাই মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারে তার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’
সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমি ৯ বছরের বেশি সময় নির্বাসন থেকে আপনাদের মাঝে আসতে পেরে মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি। প্রথমেই দেশের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতাকে অভিনন্দন জানাই, যারা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা এনেছে, প্রকৃত স্বাধীনতা এনেছে এবং নতুন বিজয় দিবস আমাদের উপহার দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এ দেশে একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবীতে একটা নজিরবিহীন ছাত্র-জনতার বিপ্লব হয়েছে। সেই বিপ্লবকে পৃথিবীর সামনে দেখিয়ে দিতে হবে, এই রক্তাক্ত বিপ্লবের মধ্য দিয়ে এই রক্তস্নাত বাংলাদেশকে আমরা প্রকৃত একটি গণতান্ত্রিক ও আইনের শাসনের রাষ্ট্র বানাতে পেরেছি।’
এই নেতা বলেন, ‘যদি আমরা আইনের শাসন কায়েম করতে পারি, আইনের শাসনের রাষ্ট্র বানাতে পারি, সর্বস্তরের সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে দিতে পারি, তাহলেই ১৮ কোটি মানুষের ঘরে ঘরে সেটার সুফল যাবে। ইনশাআল্লাহ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাবো এবং এই দেশ মেরুদণ্ড-শিড়দাঁড়া করে পৃথিবীর সামনে বলতে পারবে আমরা বীরের জাতি।’
২০১৫ সালের ১১ মে থেকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে ছিলেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ। তার আগে দেশের ভেতরেই দুই মাস নিখোঁজ ছিলেন তিনি।
দল ও পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ ছিল, ২০১৫ সালের ১০ মার্চ গভীর রাতে রাজধানীর উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ১৩/বি নম্বর সড়কে ৪৯/বি নম্বর বাড়ির ২/বি নম্বর ফ্ল্যাট থেকে র্যাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সালাহউদ্দিনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। দুই মাস পর পাশের দেশ ভারতে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় তাকে। সালাহউদ্দিনের নিখোঁজের পর সংবাদ সম্মেলন করে তার সন্ধান দাবি করেছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
ভারতে উদ্ধারের পর সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে সে দেশে অনুপ্রবেশের দায়ে মামলা হয়। প্রায় সাড়ে তিন বছর মামলার কার্যক্রম চলার পর ২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হয়।