নিজস্ব প্রতিবেদক : দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত যশোর বিজিবির তৎকালীন সুবেদার মেজর নজরুল ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। সোমবার তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে স্পেশাল জজ (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ সামছুল হক শুনানি শেষে এ আদেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত নজরুল ইসলাম যশোর ঝুমঝুমপুর ২৬ বিজিবির সুবেদার মেজর। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, সাতক্ষীরার কামালনগর গ্রামের রফিকুল ইসলাম ২০১৪ সালে ঈদুল আজহার সময় চামড়া ক্রয় করেন। স্থানীয়ভাবে প্রক্রিয়াজাত করে ১৪ অক্টোবর তিনি মোট ৪ হাজার ৬৭৭ পিচ চামড়া ট্রাক ভাড়া করে নাটোরের আড়তে উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বিজিবির সুবেদার মেজর নজরুল ইসলাম তার ফোর্সসহ চামড়া বোঝাই ট্রাকটি আটক করে যশোর ঝুমঝুমপুর বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে যান। ঝুমঝুমপুর বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল জাহাঙ্গীর হোসেনকে চামড়ার বৈধ কাজগপত্র দেখালেও তিনি পাচারের কথা বলে সুবেদার মেজর নজরুল ইসলামের সাথে কথা বলতে বলেন। সুবেদার মেজর নজরুল ইসলামের তখন ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। ওই রাতে এক লাখ টাকা জোগাড় করে নজরুল ইসলামকে দেয়া হয়। পরদিন সকালে রফিকুল ইসলাম বিজিবি ক্যাম্পে যেয়ে দেখেন চামড়া নিলামে বিক্রি করে ট্রাক ছেড়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই দু’জনকে আসামি করে ওই বছরের ১৭ নভেম্বর দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের উপসহকারী পরিচালক সৌরভ দাস ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট সুবেদার মেজর নজরুল ইসলামকে অভিযুক্ত ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল জাহাঙ্গীর হোসেনের অব্যহতির চেয়ে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন।
দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর এক রায়ে আসামি সুবেদার মেজর নজরুল ইসলামকে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত সুবেদার মেজর নজরুল ইসলাম পুলিশি গ্রেফতার এড়াতে সোমবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। বিচারক শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।