সমাজের কথা ডেস্ক : কক্সবাজারের শীর্ষ মাদক ও অস্ত্র কারবারি জাফরুল ইসলাম ওরফে বাবুলকে বিপুল মাদক ও অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। পার্শ্ববর্তী দেশে বসে চোরাকারবারির অন্যতম হোতা তারা।
র্যাব বলছে, বাবুল পালংখালী ইউনিয়নের ৯ ওয়ার্ডের মেম্বার। তার হাত ধরে প্রতি মাসে ৪০ থেকে ৫০ লাখ ইয়াবার চালান দেশে প্রবেশ করে। বাবুল রোহিঙ্গা শীর্ষ সন্ত্রাসী নবী হোসেনের সঙ্গে চুক্তি করে চিংড়ি ব্যবসার আড়ালে মাদক, অস্ত্র ও স্বর্ণ চোরাচালান করে আসছিলো।
বৃহস্পতিবার ভোরে কক্সবাজারের টেকনাফের কাটাখালী এলাকা থেকে বাবুলকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব—১৫। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ৫৫ হাজার পিস ইয়াবা, একটি বিদেশি পিস্তল, একটি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তার বাবুল মাদক কারবারসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য এলাকায় ২০—২৫ জনের একটি চক্র গড়ে তোলে। বাবুল মাদক কারবারের পাশাপাশি এলাকায় চাঁদাবাজি, স্বর্ণ চোরাচালান, অবৈধ অস্ত্র, জোর করে অবৈধ বালু উত্তোলন, চোরাই পথে গবাদি পশু চোরাচালান, অবৈধভাবে পাহাড় কেটে মাটির ব্যবসাসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতো।
তিনি আরও বলেন, বাবুল ২০০৫ সাল থেকে মাদক এনে দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দিত। ২০১৭ সালে এলাকার অপর এক মাদক কারবারি লুৎফুর রহমানের মাধ্যমে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পলাতক তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গা শীর্ষ সন্ত্রাসী নবী হোসেনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। নবীর সঙ্গে পরিচয়ের পর থেকে গ্রেপ্তার বাবুলের বিশদ আকারে মাদক সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। বাবুল পলাতক নবী হোসেনের সঙ্গে চুক্তি করে চিংড়ি ব্যবসার আড়ালে রাতের আধারে পাশের দেশ থেকে নাফ নদী দিয়ে মাদক, অস্ত্র ও স্বর্ণ চোরাচালান করে আসছে।
<< আরও পড়ুন >> লিবিয়ায় জিম্মি শ্যামনগরের ১০ যুবক
র্যাবের মুখপাত্র বলেন, এ সময় তার দলের ২০—২৫ জন সশস্ত্র সদস্য পাহারা দিয়ে চালান বাংলাদেশে পৌঁছাতো। বাবুল সপ্তাহে ৪/৫টি ইয়াবার চালান এনে অস্ত্রধারী কেরিম্যানদের সহযোগিতায় বালুখালী ক্যাম্পসংলগ্ন তার নিয়ন্ত্রিত বেশকিছু চিংড়ির খামারের ভিতরে রাখতো। এ সকল চালানে প্রায় ২ লাখ পিস ইয়াবা থাকতো এবং তা দেড় লাখ টাকায় কিনে এনে প্রায় ৩/৪ লাখ টাকায় বিক্রি করতো। এছাড়াও বাবুল পাশের দেশ থেকে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে স্বর্ণ এনে তা চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠাতো।
র্যাব জানায়, বাবুলের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে টেকনাফ থানায় একটি মাদক মামলা হয়। সে ২০১৭ সালে জাবু হত্যা মামলায় প্রায় ২ মাস কারাভোগ করে সে জামিনে বের হয়ে আসে। সে অবৈধ অস্ত্র, মাদক ব্যবসা, স্বর্ণ চোরাচালানসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অবৈধভাবে কক্সবাজারে বিলাশ বহুল ফ্ল্যাট, ডামট্রাক, ট্রাক, এলাকাতে জমি এবং মাছের প্রজেক্টসহ প্রায় ৫০ কোটি টাকার বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়ে তোলে। তার বিরুদ্ধে কক্সবাজারের উখিয়া থানায় হত্যা, মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধে ৯টির অধিক মামলা রয়েছে।