মোন্তাজ আলী, (ঢাকুরিয়া) যশোর : ২০১৩ সালের ২২ মার্চ মণিরামপুরের জয়পুর
গ্রামে জামায়াত-বিএনপির তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত আওয়ামী লীগ পরিবারগুলো আজও ক্ষতিপূরণ পায়নি। অনেকে ফিরতে পারেনি স্বাভাবিক জীবনে। তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারিভাবে দেয়া হয় তিন বান টিন ও নয় হাজার টাকা। এরপর আর কেউ খোজ রাখেনি।
স্থানীয়রা জানায়, আদালতের ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি আটকের জন্য ২০১৩ সালের ২২ মার্চ রাতে উপজেলার জয়পুর গ্রামে যায় মণিরামপুর থানা পুলিশ। জয়পুর গ্রামের কাঁচারি বাড়ি গাড়ি রেখে উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমীর ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক ফজলুর রহমানসহ কয়েকজনকে আটক করে গাড়ির কাছে ফিরছিল পুলিশ। এ সমঢ মসজিদের মাইকে ঘোষণা আসে গ্রামে ডাকাত পড়েছে। এ ঘোষণার পর বিভিন্ন গ্রাম থেকে হাজার হাজার নারী-পুরুষ হাজির হয়।
এ সুযোগে জামায়াত-বিএনপির লোকজন পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। দু’পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় পুলিশ ও জামায়াত-বিএনপির অর্ধশতাধিক লোক আহত ও আনিছুর রহমান নামে এক যুবক নিহত হয়। এরপরে পুলিশ মণিরামপুর থানায় চলে যাওয়া মাত্রই জামায়াত-বিএনপির লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে জয়পুর, চান্দুয়া, শ্রীপুর ও ঢাকুরিয়া গ্রামে নিরীহ আওয়ামী লীগকর্মিদের চিহ্নত করে বাড়িতে লুটপাট, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও বোমা বিস্ফোরক করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে।
আ’লীগ পরিবার গুলোর হাঁস-মুরগি, বাড়ি ঘর, থালা বাসন, ধান, চাল, টাকা ও কাপড়সহ সব কিছু পুড়িয়ে ধংস করে দেয়। এক পর্যায় আ.লীগ লোকদের বাড়ি থেকে তাড়ি দেয় তারা। জয়পুর গ্রামের সে সব দৃশ্য দেখে সাধারণ মানুষ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। এখনো আ.লীগের ক্ষতিগ্রস্ত অনেক পরিবার অসহায়ভাবে দিন কাটাচ্ছে।
সরকারী ভাবে তিন বান টিন ও নয় হাজার টাকা নাম মাত্র ক্ষতিপূরণ দেয় হয়েছে। অনেকে ওই সময়ের মারপিটে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। তাছাড়া রাস্তার গাছ কেটে বিক্রি করে ও বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে বিভিন্ন অস্ত্রপাতি কিনেছিল জামায়াত বিএনপি। ওই সময় সরকার ঢাকুরিয়া এলাকাবাসির নিরাপত্তা ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প দিয়েছিল। ক্যাম্পটি ঢাকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতীয় তলায় ছিল। কিন্তু জামায়াত-বিএনপিরা ওই রাতে পুলিশকে ভয় দেখিয়ে ক্যাম্প ছেড়ে যেতে বাধ্য করে।
১১ বছর পার হতে চলেছে কিন্তু জামায়াত-বিএনপির কাছ থেকে এখনো সেই সকল অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি। আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এলাকা থেকে ওই অস্ত্র উদ্ধার করার জন্য স্থানীয়রা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি দাবি জানিয়েছে।