সমাজের কথা ডেস্ক : প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে ‘জাতির পিতা’ ঘোষণা দিয়ে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করা হয়েছে।
আজ বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিনের আদালতে ওই চার্জশিট দাখিলের পর মামলা বিচারের জন্য ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছে। এখানেই বিচারের পরবর্তী কার্যক্রম চলবে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ মামলায় তারেক রহমানকে পলাতক দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও ক্রোকি পরোয়ানার আবেদন করা হয়েছে। গত ২ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইমের উপপরিদর্শক হাসানুজ্জামান এ চার্জশিট দাখিল করেন।
২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলাটি করেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল শাখা ছাত্রলীগের উপত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম।
মামলার চার্জশিটে বলা হয়, ২০২১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি মামলার বাদী ও তার বন্ধুরা মোবাইল ফোনে ইউটিউবে ‘জিয়াউর রহমানকে জাতির পিতা ঘোষণা দিলেন তারেক রহমান’ শিরোনামে একটি ভিডিও দেখতে পান। ভিডিওতে দেখা যায়, বিএনপির ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে লন্ডনে আয়োজিত এক কর্মীসভায় তারেক রহমান তার বক্তব্যের একপর্যায়ে বলেন, ‘তাহলে নেত্রীবৃন্দ, আজ এই সভায় যারা উপস্থিত আছেন, আজ এ সভায় ক্যামেরার মাধ্যমে, প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কি আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি?
আমাদের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের জাতির পিতা। আমাদের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শুধু বাঙালি জাতি না, বাঙালিসহ ৫৫ হাজার ১২৬ বর্গমাইলের মধ্যে যতগুলো জাতি বাস করে, যারা বাংলাদেশি জাতির পরিচয় বহন করে, যারা নিজেদের বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় দেয়, সেই বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জাতির পিতা, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের জাতির পিতা।’
চার্জশিটে আরও বলা হয়, ওই কর্মীসভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশের চলমান স্থিতিশীল পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশে এমন মনগড়া মিথ্যা তথ্য ও উদ্ভট যুক্তি দেন। তিনি জাতিকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করে ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা করেছেন। তার ইচ্ছাকৃত ইতিহাস বিকৃতির এ বক্তব্য জনমতে বিভ্রান্তি সৃষ্টির মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলার অবনতির উদ্দেশে দেওয়া। ওই বক্তব্যের মাধ্যমে তারেক রহমান ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারায় অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
চার্জশিটে বলা হয়, বিতর্কিত ভিডিও প্রচারকারী চ্যানেল সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য গত বছরের ৩০ মার্চ গুগলে ই—মেইল করা হয়। গুগল কর্তৃপক্ষ বিতর্কিত ভিডিও প্রচারকারী চ্যানেল সম্পর্কে তথ্য দেয়নি। গুগল তথ্য না দেওয়ায় ভিডিও প্রচারকারীর নাম ও ঠিকানা জানা সম্ভব হয়নি।