সমাজের কথা ডেস্ক : ব্যাংকগুলোর হাতে ডলারের সরবরাহ বাড়াতে রপ্তানিকারকদের রিটেনশন কোটা (ইআরকিউ) হিসাবে বৈদেশিক মুদ্রা জমা রাখার সীমা আবার অর্ধেকে নামিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে রপ্তানিকারকদের নিজস্ব হিসাবে সীমার বেশি থাকা ডলার ব্যাংকের হাতে চলে আসবে। এর বিপরীতে রপ্তানিকারকরা টাকা পাবেন। অন্যদিকে সীমা কমিয়ে দেওয়ায় রপ্তানি আয় থেকে নতুন করে ব্যাংকের কাছে আগের চেয়ে বেশি ডলার যাবে।
গত বছরের জুলাই মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক এক নির্দেশনায় গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই হার অর্ধেকে নামিয়ে আনে। এর পর জানুয়ারি থেকে আগের নিয়ম চালু হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক এক প্রজ্ঞাপন জারি করে অনির্দিষ্টকালের জন্য আবার ইআরকিউ হিসাবে জমার সীমা অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে।
বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইন অনুযায়ী রপ্তানি আয়ের একটি নির্দিষ্ট অংশ ইআরকিউ হিসাবে জমা রাখতে পারেন রপ্তানিকারকরা। রপ্তানি পণ্য ও সেবা তৈরিতে স্থানীয় মূল্য সংযোজন অনুযায়ী, ওই হিসাবে কোন খাতের উদ্যোক্তারা কত অংশ বৈদেশিক মুদ্রা জমা রাখতে পারবেন, তা নির্ধারণ করা রয়েছে। যেমন— তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা ১৫ শতাংশ রাখতে পারেন। অপরদিকে সফটওয়্যার, ডেটা এন্ট্রি কিংবা তথ্য প্রযুক্তি খাতের অন্যান্য সেবা রপ্তানির বিপরীতে আসা বৈদেশিক মুদ্রার ৭০ শতাংশ ইআরকিউ হিসাবে রাখা যায়। অন্যান্য সেবা খাতে এ হার ৬০ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংক গতকালের প্রজ্ঞাপনে জমা রাখার হার ১৫ শতাংশ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ, ৬০ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ এবং ৭০ শতাংশ থেকে ৩৫ শতাংশ করেছে।
ডলার সংকট নিরসনে বিভিন্ন উদ্যোগের অংশ হিসেবে গত বছরের জুলাই মাসে ইআরকিউ হিসাবে জমা থাকা বৈদেশিক মুদ্রার ৫০ শতাংশ দ্রুত নগদায়ন করার জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি ইআরকিউ হিসাবে জমা রাখার সীমা অর্ধেক করে দেয়, যা গত ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর ছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান সমকালকে বলেন, ডলার সংকট সামাল দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ইআরকিউ হিসাবে বৈদেশিক মুদ্রার জমা রাখার সীমা কমিয়েছে বলে তিনি মনে করেন। পোশাক রপ্তানিকারকরা রপ্তানি আয়ের ১৫ শতাংশ এই হিসাবে রাখতে পারতেন। ওই অর্থ দিয়ে আমদানি ব্যয়সহ নানা বিষয়ে পরিশোধ করা যায়। ফলে তাদের কিছুটা সমস্যা হবে। যদিও রপ্তানিকারকদের অনেকেই এখন ১৫ শতাংশ রাখতে পারছেন না। তিনি আশা করেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বাংলাদেশ ব্যাংক আবার আগের নিয়ম চালু করবে।