সমাজের কথা ডেস্ক : যত দিন যাচ্ছে ততই জনপ্রিয় হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিং। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে গত এক বছরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের হিসাব বা অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে দুই কোটি ৯১ লাখ ৯৫ হাজার ৮৬৬টি ।
চলতি বছরের আগস্ট শেষে মোট মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ২১ কোটি ২৪ লাখ ২০ হাজার ৪৭৬। এক বছর আগে ২০২২ সালের আগস্ট শেষে যা ছিল ১৮ কোটি ৩২ লাখ ২৪ হাজার ৬১০টি।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহকের সঙ্গে বাড়ছে লেনদেন। বর্তমানে নগদ, বিকাশ, এম ক্যাশ, রকেট, উপায়, মাই ক্যাশ, শিওর ক্যাশসহ বিভিন্ন নামে ১৩টি ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান এমএফএস এ সেবা দিচ্ছে।
নিবন্ধিত হিসাবের মধ্যে পুরুষ গ্রাহক ১২ কোটি ২৭ লাখ ৮৯ হাজার ১৪১ ও নারী ৮ কোটি ৯০ লাখ ৬১ হাজার ৫৯৮ জন। আলোচিত সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ১৮ হাজার ৯৮৮টি।
টানা তিন মাস একবারও লেনদেন করেনি এমন হিসাবকে নিষ্ক্রিয় বলে গণ্য করে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো। সেই হিসাবে আগস্ট শেষে সক্রিয় গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ১৯ লাখ ৬৩ হাজার।
২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্—বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু হয়।
এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার সিংহভাগই বিকাশের দখলে। এরপরই রয়েছে নগদ’র অবস্থান।
মোবাইল ব্যাংকিং গরিবের ব্যাংকিংয়ে পরিণত হয়েছে। বাড়ি থেকে দূরে দেশের যে কোন অঞ্চলে একজন শ্রমজীবী মানুষ পরিশ্রম করে বা একজন সারাদিন রিকশা চালিয়ে সন্ধ্যায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রামের বাড়িতে টাকা পাঠিয়ে দিতে পারছে।
<< আরও পড়ুন >> সিন্ডিকেট ধরা যায় না, অধরা থেকে যায় : পরিকল্পনামন্ত্রী
তৈরি পোশাক শিল্পের মত শ্রমঘন শিল্পের শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। মাসের বেতনের জন্য এখন আর লাইনে দাঁড়িয়ে সময় নষ্ট করতে হয় না। বেতন নির্দিষ্ট সময়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের হিসাবে জমা হচ্ছে।
আগস্ট মাসে এ সব প্রতিষ্ঠানের দুই হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা বেতন—ভাতা বাবদ বিতরণ হয়েছে।
মোবাইল ব্যাংকিং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর নির্ভরযোগ্য লেনদেনের মাধ্যমে পরিণত হয়েছে।
মোবাইল ব্যাংকিং ক্যাশলেস লেনদেনেও ব্যবহৃত হচ্ছে। বেতন—ভাতা ছাড়াও আগস্ট মাসে ৪ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা কেনাকাটায় বা অন্য প্রয়োজনে লেনদেন করেছেন হিসাবধারীরা।
বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিলের মত বিভিন্ন পরিষেবার বিল পরিশোধ করা হয়েছে তিন হাজার ২৫০ কোটি টাকার।