নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রায় ছয় মাস পরে কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে নিহত শ্রমিক মোফাজ্জেল হোসেন মোফার লাশ। গতকাল বৃহস্পতিবার সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের গোপালপুর আদর্শ গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে ওই লাশ উত্তোলন করা হয়। এসময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক হিরন্ময় সরকার উপস্থিত ছিলেন।
মামলার তদšত্ম কর্মকর্তা হিরন্ময় সরকার বলেছেন, ২০২২ সালের ২ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার ঘোড়াগাছা গ্রামের মেসার্স মোজাহার মেটাল ওয়ার্কসের ভিতর থেকে মোফাজ্জেল হোসেন মোফার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের চাপে ওই সময় ময়না তদšত্ম ছাড়াই লাশটি দাফন করতে বাধ্য হয় পরিবার। এই ঘটনায় নিহত মোফার পিতা আব্দুল জলিল গত বছরের ১ ডিসেম্বর ৬ জনের নামে আদালতে মামলা করেন।
বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালাল এই ঘটনায় থানায় আর কোন মামলা হয়েছে কিনা মামলাটি দাখিলের সাতদিনের মধ্যে আদালতকে অবহিত করার জন্য কোতোয়ালি থানার ওসিকে আদেশ দিয়েছিলেন।
সেই আদেশের পর মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় পিবিআইকে। তদন্ত কর্মকর্তা হিরন্ময় সরকার লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য আদেশ পাওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেন। আদালতের আদেশে গতকাল বৃহস্পতিবার লাশটি কবর থেকে উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলো, মোজাহার মেটাল ওয়ার্কসের ম্যানেজার খালিদ হোসেন, শ্রমিক সরদার গোপালপুর আদর্শ গ্রামের ফজলুল করীম দফাদারের ছেলে হাসান, সুপার ভাইজার একই গ্রামের মইনো দফাদারের ছেলে সোহেল হোসেন, শ্রমিক মিনহাজ হোসেন, জিরাট গ্রামের আলেকের ছেলে মেহেদী হাসান ও রায়মানিক কচুয়ার জলিল সরদারের ছেলে মিজানুর রহমান মিজান।
বাদী মামলায় উলেস্নখ করেছেন, ঘোড়াগাছার মোজাহার মেটাল ওয়ার্কসে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিল তার ছেলে মোফাজ্জেল দফাদার মোফা। শ্রমিক মিনহাজ প্রায়ই তার সাথে গোলযোগ ও হত্যার হুমকি দিতো। ফলে মোফাজ্জেল কাজ ছেড়ে অন্যত্র কাজ নিয়েছিল। পরবর্তীতে হাসান ও সোহেলের অনুরোধ এবং নিরাপত্তা দেয়ার শর্তে মোফাজ্জেল ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট এই কারখানায় যোগদান করে।
গত ২ সেপ্টেম্বর সকালে আসামি সোহেল গোপালপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাককে ফোন করে জানায় মোফাজ্জেল মারা। এরপর মোফাজ্জেলের পরিবারের লোকজন যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে এসে লাশ দেখতে পায়। এ সময় সাড়্গী রম্নবেল হোসেন মৃত মোফাজ্জেলের ছবি তুলতে গেলে আসামিরা বাধা দেয় এবং খারাপ ব্যবহার করে।
এরপর আসামিরা লাশের ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ গ্রহণ করে দ্রম্নত বাড়িতে এনে দাফন সম্পন্ন করে। আসামিরা মোফাজ্জেলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে বৈদ্যুতিক শকে পুড়ে মারা গেছে বলে প্রচার করেছে। তিনি খোঁজখবর নিয়ে হত্যার বিষয়টি অনেকটা নিশ্চিত হয়ে আদালতে এই মামলা করেছেন।