১৪ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১লা ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট পাস
চোকার্সই থেকে গেলো দক্ষিণ আফ্রিকা
101 বার পঠিত

কত কটু কথা শুনতে হয়েছে তাদের। নেলসন ম্যান্ডেলার দেশটি দারুণ খেলে প্রায় শেষ দিকে এসে খেই হারিয়েছে। বলা হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট প্রসঙ্গ নিয়ে। ওয়ানডে কিংবা টি টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপে তীরে এসে তরী ডোবায় তাদের হতবিহ্বল চেহারা দেখে আফসোসই ঝরেছে সমর্থকদের। বারবারই ‘চোকার্স’ তকমা এমনভাবে পিঠে সেটে আছে, দলটির নাম শুনলেই আত্মবিশ্বাস কমতি এক দেশের দৃশ্য মানসপটে ভেসে আসবে। যারা ১৯৯৮ সালের পর কোনও টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে গিয়ে কোনোবারই ফাইনালে ওঠেনি কিংবা ট্রফি ছোঁয়া দূরত্বে পৌঁছাতে পারেনি।

এবার টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মারক্রাম-ক্লাসেনরা পিঠ থেকে চোকার্স তকমা ঝেরে ফেলে প্রথমবারের মতো ফাইনালে জায়গা করে নেয়।

তবে ফাইনাল নিয়ে ছিল বড় ভয়৷ যাদেরকে নিয়ে মনের মধ্যে উঁকি দিচ্ছিল দল পারবে তো? প্রশ্ন ছিল, প্রতিপক্ষ যখন ২০০৭ এর চ্যাম্পিয়ন ভারত, তাদের হারিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে অধরা শিরোপা হাতে নিয়ে বাধভাঙা উৎসব আদৌ সম্ভব কিনা?

তাদের সেই শঙ্কারই ভয়াবহ বাস্তব রূপ দেখা গেছে।

হয়তো ভয় থেকেই জয়ের দেখা মিলেনি। পুরানো রোগ আবারও ফিরে এসেছে। চোকার্স তকমা দক্ষিণ আফ্রিকাকে শেষ পর্যন্ত ছেড়ে যায়নি। ফাইনালে আবার ফিরে এসে জড়িয়ে রেখেছে আষ্টেপৃষ্ঠে।

তাতেই আরাধ্য ট্রফি নিয়ে রাজকীয় উৎসব করা হয়নি ক্লাসেনদের।
আর হবেই বা কী করে! কেন ক্লাসেনদের চোকার্স বলা হয় তা যেন ফাইনাল ম্যাচ দেখলে পরিষ্কার। যেখানে ফাইনাল জিততে ৩০ বলে ৩০ রান প্রয়োজন, উইকেট আছে ৬টি। সেখানে ভারতের কাছে নাটকীয়ভাবে ম্যাচ হেরে দুঃসহ দিন দেখতে হলো। মাঠেই দুই শিবিরে কান্নার দৃশ্য। ডেভিড মিলার নিদারুণ কষ্ট পেয়ে জার্সি দিয়ে চোখ মুছেছেন। হয়তো চিন্তা করছেন কী থেকে কী হয়ে গেলো। অনেকটা জেতা ম্যাচ কি নির্দয়ভাবে হাতছাড়া হলো।

বিপরীতে হার্দিক পান্ডিয়ার অবয়বে খুশির কান্না। ২০০৭ এর পর দ্বিতীয় ট্রফি তাদের ঘরে। বারবাডোসের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন সূর্যোদয় হলো না। বরং মিলার-ক্লাসেনদের চাপে ভারত যখন চাপে পড়ে যায়, সেসময় হার্দিক-বুমরা ব্যাটনটা নিজেদের দিকে ঘুরিয়ে নেন। এর আগে বিরাট কোহলি ব্যাটে সমালোচনার জবাব দিয়ে ম্যাচটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে দেন। ম্যাচশেষে ম্যাচসেরা হয়ে টি টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণাটা দিয়েছেন স্মরণীয় এই দিনেই।

আসলে ফাইনাল জিততে অভিজ্ঞতা লাগে। অনেকেই তা বলে থাকেন। ভারত এই জায়গায় অনেক এগিয়ে। তা যেন আজ নতুন করে প্রমাণ করলো।

২০০৭ এ মহেন্দ্র সিং ধোনির শিরোপা জয়ী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন রোহিত শর্মা। হয়তো আজকের ফাইনালে সেদিনের অভিজ্ঞতা কাজে লেগেছে। আর দক্ষিণ আফ্রিকা চাপের মুখে শেষ রক্ষা করতে পারেনি। দেশে ফিরে প্রথমবারের মতো রাজকীয় সংবর্ধনা পাওয়ার সুযোগও হাতছাড়া হলো।

আসলে শিরোপা জিততে যেমন অভিজ্ঞতা লাগে। লাগে টিম স্পিরিটের সঙ্গে চাপকে জয় করার অসাধারণ ক্ষমতা। যার অভাব দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে দৃশ্যমান।

এমন চাপ তো দক্ষিণ আফ্রিকা চলতি আসরে আগেও উতরে গেছে ভালোভাবে। বাংলাদেশ ও নেপালের বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর জয়ে চোকার্সের আবরণ খুলে ফেলার ইঙ্গিত দিয়েছিল তারা। কিন্তু পারলো না, চোকার্সই থেকে গেলো প্রোটিয়ারা।

বারবাডোসের নীল সমুদ্রে ভারতের বোলিং আক্রমণের ঢেউয়ের আঘাতে হারিয়ে গেলো তাদের প্রথম শিরোপা জয়ের স্বপ্ন। চোকার্স শব্দটা স্থায়ীভাবে মুছে ফেলার দুর্দান্ত সুযোগ হাতছাড়া করার এমন দিনটি হ্যান্সি ক্রনিয়ে-ক্লুজনার-ডোনাল্ডের উত্তরসূরিরা ভুলবেন কী করে?

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram