ইব্রাহিম হোসেন, চুকনগর : খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগরে বন্দোব¯ত্ম বাতিল হওয়ার পরও অবৈধভাবে দখলে নিয়েছে সরকারি ৩টি খাস খাল।
দখলকারীরা খালে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করেছে। এ কারণে আশে পাশের জমি থেকে পানি নিষ্কাশন করতে পারছেন না কৃষকরা। সময় মত পানি নিষ্কাশন ও সরবরাহ করতে না পারায় কৃষকদের ধান ও মাছ চাষে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।
অল্পদিনের মধ্যে পানি নিষ্কাশন করতে না পারলে এবার ইরি বোরো মৌসুমে ধান চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এ কারণে খাস খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও ইরি বোরো মৌসুমে পানি নিষ্কাশনের জন্যে এলাকায় কৃষকদের গণস্বাক্ষর সম্বলিত একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গ্রামের পানি নিষ্কাশন ও ফসলাদি পরিবহনের জন্যে আটলিয়া ইউনিয়নের বয়ারসিং মৌজার নারকেল তলা খাল, টাটিমারী খাল ও পিঁপড়েমারী খাল অত্যšত্ম গুরম্নত্বপূর্ণ। এলাকার ১২ ব্যক্তি ১৬ টি বন্দোব¯েত্মর মাধ্যমে ওই খাল ও পাড় এলাকা দখল করে আছে।
দখলকারীরা হলেন বয়ারসিং গ্রামের মৃত অশ্বিনী মন্ডলের ছেলে নরেশ মন্ডল, মৃত রম্নক্কিনী মন্ডলের ছেলে বিশ্বজিৎ মন্ডল, মৃত গৌরপদ মন্ডলের ছেলে কার্তিক চন্দ্র মন্ডল, মৃত শিবরাম মন্ডলের ছেলে গুরম্নপদ মন্ডল, মৃত অতুল মন্ডলের ছেলে শ্যামল মন্ডল, মৃত অজিত মন্ডলের ছেলে স্বপন মন্ডল, মৃত সতীশ মন্ডলের ছেলে চন্ডিচরণ মন্ডল, মৃত সুধীর মন্ডলের ছেলে বিধান মন্ডল, মৃত অজিত হালদারের ছেলে নব কুমার হালদার, মৃত সুধীর হালদারের ছেলে কৃষ্ণপদ হালদার, মৃত সুধান্য মন্ডলের ছেলে কর্ণধর মন্ডল ও মৃত রাখাল মন্ডলের ছেলে বিজন মন্ডল।
তারা বিভিন্ন ছল চাতুরি ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে সরকারি খাস খাল নিজেদের নামে বন্দোব¯ত্ম নেয়। বন্দোব¯ত্ম নেওয়ার পর পানি সরানোর খালগুলোর উপর একাধিক স্থানে আড়াআড়ি বাঁধ তৈরি, নেটপাটা দিয়ে মাছ চাষ করছেন। ওই খালপাড়ের জমির মালিকরা খালের উপর অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে রক্ষা পাওয়ার জন্যে এবং খালের বন্দোব¯ত্ম বাতিলের দাবিতে খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেন।
জেলা প্রশাসকের পড়্গ থেকে বিষয়টি সরেজমিন তদšেত্ম বিবাদীগণের কার্যকলাপ সরকারি শর্তের পরিপন্থী ও গরীব অসহায়দের সাথে প্রতারণা মর্মে প্রমাণ পাওয়া যায়। একারণে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বন্দোব¯ত্মকৃত জমির দলিল বাতিল করেন। এরপর বিবাদীরা বিভাগীয় কমিশনার ও ভূমি আপিল বোর্ডে (ঢাকা) খাস জমি পূর্ণবহালের দাবিতে আপিল করেন। সেখানেও তাদের বন্দোব¯ত্ম বাতিল করা হয়।
তারপরও বিবাদীরা স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় ওই খাল তিনটির উপর বাঁধ দিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি ও মাছ চাষ করার কাজ অব্যাহত রেখেছেন। এতে সময়মত পানি সরবরাহ করতে না পারায় শতশত কৃষক মৎস্য ঘের থেকে পানি নিষ্কাশন করে মাছ ধরাসহ ইরি বোরো মৌসুমে ধান রোপণ করতে পারছেন না।
এব্যাপারে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরীফ আসিফ রহমান বলেন, কৃষকদের গণস্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়াগেছে। কৃষকেরা যাতে খাল দিয়ে পানি নিষ্কাশন করতে পারে সেজন্যে অল্পদিনের মধ্যে খাল তিনটি উন্মুক্ত করা হবে।