সাইফুল ইসলাম : ভৈরব নদে ভাটার টান। কূল ধরে নেট জাল টানছেন এক বৃদ্ধ। কূল বরাবর বহুদূর চলে যাচ্ছেন তিনি। আবার ফিরে আসছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এভাবেই মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন যশোরের মণিরামপুর উপজেলার আলতাফ সরদার। বড় মাছ ধরা দেয়না তার জালে। তাই গলদা চিংড়ির রেণুতে নজর তার। চিংড়ি রেণু বাটিতে তুলে কোমরে বাঁধা হাড়িতে রাখেন। এভাবে কেটে গেছে ৩০ বছর। আলতাফ সরদার এক নয়; নওয়াপাড়ায় ভৈরব নদীর তীরে আরো অনেকে চিংড়ি রেণু সংগ্রহ করেন। প্রতিদিন ভাটার শুরুতেই নদীতে নেমে পড়েন তারা। চলে জোয়ার আসার সময় পর্যন্ত।
মণিরামপুর উপজেলার চিনাটোলা এলাকার আলতাফ সরদার জানান গলদা চিংড়ি রেণু ধরে ৬ সদস্যের সংসার চালাচ্ছেন তিনি। ছেলেদের উপার্জিত টাকায় সংসার না চলায় ৫৫ বছর বয়সে এসেও পানিতে নামতে হচ্ছে তার।
তিনি বলেন ‘আমি আজ প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ বছর ধরে নওয়াপাড়ার ভৈরব নদীতে গলদা চিংড়ির রেণু ধরেই তিন ছেলে ও এক মেয়েসহ পরিবারের ছয়জনের ব্যয় নির্বাহ করি। তিনি আরও বলেন, এক হাজার গলদা চিংড়ার রেণু তিন হাজার টাকা করে বিক্রি করি। এক হাজার রেণু ধরতে চার থেকে পাঁচ দিন সময় লাগে। প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ টির বেশিও রেণু পোনা ধরি। এই রেণুগুলো মণিরামপুরের চিনাটোলা বাজারে বিক্রি করি। শুধু ভৈরব নদীতেই পোনা ধরি না। মাঝে মাঝে অন্যান্য নদীতেও রেণু সংগ্রহ করতে যাই। সব মিলিয়ে গলদা চিংড়ির রেণু ধরে যে টাকা পায় তাতে আল্লাহর রহমতে আমার সংসার চলে।