১৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২রা আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
চরমপন্থী পরিচয়ে উড়োচিঠি দিয়ে বিচারককে হুমকি, আইনজীবীসহ আটক ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরে চরমপন্থী পরিচয়ে আদালতে উড়ো চিঠির মাধ্যমে বিচারককে হুমকি দেয়ার ঘটনায় এক আইনজীবীসহ তিনজনকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) এসআই মফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন। তিনজনকে ডিবি গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করলে ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন তারা। বিচারক জুুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহম্মেদ জবানবন্দি শেষে তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন।

আটককৃতরা হলেন, বাঘারপাড়া উপজেলার বল্লামুখ গ্রামের অ্যাডভোকেট নব কুমার কুন্ডু, পুরাতন কসবা কাজীপাড়ার রবিউল ইসলাম রুবেল ও ষষ্ঠীতলাপাড়ার বাদল দাসের বাড়ির ভাড়াটিয়া মিহির কুমার সাহা।

ডিবি’র এসআই মফিজুল ইসলাম জানিয়েছেন, প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে ২০২৩ সালের ২৫ মে রাতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে একটি মেয়েকে চারজন গণধর্ষণ করে। এই ঘটনার মামলায় চারজনই পুলিশের হাতে আটক হয়। একজনের জামিন হলেও অন্য তিনজন এখনো জেলহাজতে আটক রয়েছে। মামলাটিতে প্রথমে আবুল হোসেন নামে এক আইনজীবী আসামিদের পক্ষে কাজ করছিলেন। পরবর্তীতে মামলাটি হাতে নেয়ার জন্য নানা কলাকৌশল অবলম্বন করেন অ্যাডভোকেট নব কুমার কুন্ডু। কিন্তু তিনিও শেষ পর্যন্ত মামলাটি হাতে নিতে পারেননি। বর্তমানে মামলাটিতে আসামিদের পক্ষে কাজ করছেন অ্যাডভোকেট চিত্ত রঞ্জন।

দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করেও মামলাটি হাতে না পেয়ে নানা ধরনের অপকৌশল অবলম্বন শুরু করে অ্যাডভোকেট নব কুমার কুন্ডু। কিন্তু শেষ পর্যন্ত না পেয়ে ২৭ জানুয়ারি যশোর সিভিল কোর্ট মোড়ে মেসার্স ভাই ভাই ফটোস্ট্যাট নামক দোকানে যান নব কুমার কুন্ডু। এসময় নিজেকে নজরুল ইসলাম নাম দিয়ে চরমপন্থী দল বিপ্লবী কমিউন্টি পার্টির সদস্য বলে পরিচয় দেন। সেখান থেকে আদালতের বিচারককে উদ্দেশ্য করে ওই দোকানের কর্মচারী মিহির কুমার সাহাকে দিয়ে একটি চিঠি কম্পোজ করান।

ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি মামলার (মিস ২৯/২৪) ধার্য তারিখ। ওইদিনে আসামিদের জামিন দিবেন। অন্যথায় আপনার জীবন শেষ করে দেয়া হবে এবং আপনার ওই অবস্থা হবে। এই চিঠি পেয়ে বিষয়টি যশোর আদালত পাড়ায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। তবে এই ঘটনাটি ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলামকে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দায়িত্ব দেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। তদন্তকালে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে গত বুধবার গভীর রাতে যশোর শহরের পুরাতন কসবা এলাকার বাসা থেকে প্রথমেই রবিউল ইসলাম রুবেলকে আটক করা হয়।

পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মিহির কুমার সাহাকে আটক করা হয়। এরপরে বৃহস্পতিবার আটক করা হয় অ্যাডভোকেট নব কুমার কুন্ডকে। এদিনই থানায় মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।

তবে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানিয়েছেন, গণধর্ষণ মামলাটির আইনজীবী নিযুক্ত হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন অ্যাডভোকেট নব কুমার কুন্ডু। দ্বিতীয় দফায় আইনজীবী পরিবর্তন করতে গিয়ে না পেরে ২৭ জানুয়ারি মিহির কুমারকে দিয়ে কম্পোজ করে রুবেলের মাধ্যমে যশোর পোস্ট অফিস থেকে ডাকযোগে চিঠিটি আদালতে পাঠাতে বলা হয়। রুবেল পোস্ট অফিসে গেলে অ্যাডভোকেট নব কুমারের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করেন। তাই ঘটনার সূত্র ধরেই ওই তিনজনকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হলে ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর রহমান শাহিন বলেছেন, বিষয়টি তারা জেনেছেন। তদন্ত করে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram