নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোর শহরের বেজপাড়ার গৃহবধূ আইরিন পারভীন রিনি হত্যা মামলার চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। চার্জশিটে নিহতের স্বামী মাঈদুল হাসান পিয়াসকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। চাঁচড়া ফাঁড়ি পুলিশের এসআই সাইদুর রহমান তদন্ত শেষে আদালতে এই চার্জশিট দাখিল করেছেন। অভিযুক্ত পিয়াস বেজপাড়ার মৃত সৈয়দ মিজানুর রহমান কবুর ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ১২/১৩ বছর আগে বেজপাড়া তালতলার আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাথে রিনির বিয়ে হয়েছিল। দাম্পত্য জীবনে তাদের একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। ২০১৯ সালে মামুনের মৃত্যু হলে এক বছর পরে পিয়াসের সাথে তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্ত্রী রিনিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকে।
আর এইসব কারণে বাড়ি থাকতে না পেরে পিয়াস এলাকা ছেড়ে রিনিকে নিয়ে চাঁচড়া রায়পাড়া তেতুলতলা ইসমাইল কলোনীতে আব্দুর রউফের বাড়িতে ভাড়া বসবাস করতো। ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি রিনি তার প্রথম স্বামী মামুনের মৃত্যু বার্ষিকী পালন করে। ১১ ফেব্রুয়ারি তার মেয়ে ও বাড়ির অন্য লোকজন জানতে পারে রিনি অসুস্থ অবস্থায় গলায় কালচে দাগ ও মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছে। পরে তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় রিনির ভাই শহরের খালধার রোডের বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন বাদী হয়ে পিয়াসের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, প্রথম স্বামী মামুনের মৃত্যু বার্ষিকী পালন করায় পিয়াসের সাথে তার মনোমালিন্য শুরু হয়। একপর্যায়ে কথা কাটাকাটির মধ্যে পিয়াস তাকে মারপিট করে। মায়ের কান্না শুনে রিনির মেয়ে জান্নাতি তার আত্মীয় স্বজনদের মোবাইলে সংবাদ দেয়। আত্মীয় স্বজনেরা আসার আগ মুহূর্তে পিয়াস ঘরের দরজা খুলে পালিয়ে যায়। গুরুতর অবস্থায় রিনিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সুরতহাল ও ময়না তদন্ত রিপোর্ট এবং স্বাক্ষীদের বক্তব্যে রিনিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তার স্বামী পিয়াসের বিরুদ্ধে আদালতে এই চার্জশিট দাখিল করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। চার্জশিটে পিয়াসকে পলাতক দেখানো হয়েছে।