নেংগুড়াহাট (মনিরামপুর) প্রতিনিধি : মনিরামপুর উপজেলা নেংগুড়াহাট অঞ্চলের লিচুগাছে শুকিয়ে যাচ্ছে ও ফেটে যাচ্ছে । গত বছরের তুলনায় এ বছর নেংগুড়াহাট অঞ্চলে অঅম ও লিচুর ফলন বেশি হয়েছে। তবে তীব্র খরা ও গরমের কারণে লিচু ফেটে যাচ্ছে, আম ঝরে যাচ্ছে, বোটা শুকিয়ে যাচ্ছে। তাতে দুশ্চিন্তার শেষ নেই লিচু ও আম চাষিদের। এ সব সমস্যার কারণে লিচুচাষিরা অনেকটা কাঁচা অবস্থায় তাদের লিচুগুলো বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছেন। তবে কৃষি বিভাগ মনে করছে আমে এখনো বড় বিপর্যয় আসেনি।
স্থানীয়রা জানান, নেঙ্গুড়াহাট ও রাজগঞ্জ অঞ্চলে বোম্বাই, মাদ্রাজি, চায়না থ্রি, বেদানা, কাঁঠালি, হাড়িয়াসহ কয়েক জাতের লিচুর ফলন হয়েছে এই এলাকায়। এখান থেকে লিচু যায় দেশের বহু সবজায়গায়। হায়াতপুর ও শাহাপুর গ্রামের কয়েকজন লিচু চাষি বলেন, গত বছর আমরা ভালো ফলন পাইনি,এ বছর অধিক ফলন হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন রোগবালাই দেখা দিচ্ছে,গাছে লিচু ফেটে যাচ্ছে, ঝরে পড়ছে মাটিতে,সামনে আবার ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
এখন বাজারে লিচুর দাম মোটামুটি ভালো,তাই অপরিপক্ব লিচুগুলো বিক্রি করে দিচ্ছি। একই এলাকার লিচু চাষি ফরিদ শেখ বলেন, এ বছর আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় গাছে লিচুফেটে যাচ্ছে। বৃষ্টিপাত দেরিতে হওয়ায় লিচুর দানাও ছোট হয়েছে, তার ওপর প্রচ- তাপ প্রবাহের ফলে লিচু গাছে রোগ লেগেছে। লিচু ফেটে যাচ্ছে,সার,কীটনাশক শ্রমিকদের মজুরি দেয়ার পর এবার লাভের মুখ ভালমত দেখতে পারব না।
লিচু চাষি ও ব্যাবসায়ি নজরুল ইসলাম বলেন,এবার তো ফলন বেশি কিন্তু খারাপ আবহাওয়া ও খরা রয়েছে। গত বছর যে গাছে পাঁচ হাজার লিচু ধরেছে, এবার সে গাছে দশ হাজারেরও বেশি লিচু ধরেছে। হঠাৎ হালকা শিলাবৃষ্টিতে লিচুর গায়ে দাগ পড়ছে, ঝরে পড়ে যাচ্ছে, দাবদহের কারণের লিচুগুলো ফেটে যাচ্ছে।
চালুয়াহাটি ইউনিয়ন কৃষি উপসহকারী মারুফুল হক ও হাবিবুর রহমান বলেন, এবার লিচুর ফলন বেশি হয়েছে। তীব্র গরমের কারণে লিচু ফেটে যাচ্ছে, এসব সমস্যার কারণে লিচু চাষিরা অনেকটা কাঁচা অবস্থায় তাদের লিচুগুলো বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছেন। তবে এখনো আশা শেষ হয়ে যায়নি।
এদিকে গরম, খরা ও বৃষ্টিহীনতার কারণে ফেটে, পচে ও ঝরে যাচ্ছে আম। প্রায় প্রতিটি বাগানে এই অবস্থা। এই ধারা অব্যাহত থাকলে লোকসানের আশঙ্কা করছেন আম চাষিরা।
সরেজমিনে দেখাগেছে উপজেলার বিভিন্ন আমবাগানে ও আম গাছের নিচে আম ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। চলতি বছরে আমের পর্যাপ্ত পরিমাণ গুঁটি আসলেও অতি মাত্রায় খরার কারণে সে সবগুটি গাছ থেকে ঝরে পড়ছে।এছাড়া গাছে থাকা আমগুলোতে কালো দাগ দেখা যাচ্ছে, আমের বোটাগুলো ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়ছে। ফলে আম খসে পড়ে যাচ্ছে। চাষিরা বৃষ্টির অপেক্ষায় দিনগুনছেন।
স্থানীয় আমচাষি আবদুল কাদের বলেন, জমিতে আম চাষ করেছি। প্রচ- খরার কারণে আম ঝরে যাচ্ছে গাছে সেচ দেবার মতো পানিরও তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। তারপরেও পানি সেচের ব্যবস্থা করা হয়েছে তবু রক্ষা করা যাচ্ছে না আম। বৃষ্টি নেই, রোদে ও তাপে পচন ধরে আমও পড়ে যাচ্ছে এছাড়া ও বৃষ্টি না হবার কারণে আমের সাইজ অনেক ছোট রয়েছে।
চালুয়াহাটি ইউনিয়ন কৃষি উপসহকারী মারুফুল হক ও হাবিবুর রহমান বলেন,এই অবস্থায় গাছের গোড়ায় পানি সেচ দেওয়ার বিকল্প নেই। তবে আম গাছেও পানি স্প্রে করা যেতে পারে। তাছাড়া কিছু ক্ষতি হলেও সব মিলিয়ে আমচাষিরা হয়তো লোকসানে পড়বেন না। ইেিতামধ্যে বৃষ্টির দেখা পাওয়া গেছে, তাপমাত্রাও কমে এসেছে। তারা আশা করেন আম উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে এবার।