কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি : ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে পিকআপ ও ব্যাটারিচালিত অটোভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কোটচাঁদপুর-জীবননগর সড়কের কাশিপুর পৌর কলেজের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলো-উপজেলার বলাকান্দা গ্রামের শাহিন উদ্দিনের মেয়ে খুকু মনি (৭), একই উপজেলার শাহাপুর ঘিঘাটি গ্রামের মখলেছ উদ্দিনের ছেলে ভ্যানচালক সলেমান উদ্দিন (৬০), কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গী গ্রামের রুবেল হোসেনের ১১ মাস বয়সী ছেলে রাফান, রাফানের দাদি শিউলি বেগম (৫০) এবং অজ্ঞাত আরও এক ভ্যানযাত্রী।
কোটচাঁদপুর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মঈন উদ্দিন বলেন, সকালে কালীগঞ্জ থেকে হতাহতরা ব্যাটারিচালিত ভ্যানযোগে কোটচাঁদপুরের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপভ্যানের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হন। এ সময় আহত হয় আরও পাঁচজন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে ভর্তি করে। সেখান থেকে ৪ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন চিকিৎসক। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ২ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ঘাতক পিকআপ চালক পালিয়ে গেছে। পুলিশ দুর্ঘটনাকবলিত পিকআপ ভ্যানটি জব্দ করেছে।
নিহতের স্বজনরা জানান, নিহত খুকুমনি ও রাফান মামাতো-ফুফাতো ভাইবোন। রাফানকে ডাক্তার দেখাতে সকালে পাখিভ্যানযোগে মা-দাদি কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যেই এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সাহাপুর গ্রামের কামাল কাজী জানান, কোটচাঁদপুরমুখি একটি দ্রুতগামী পিকআপ ভ্যান অপরদিক থেকে যাত্রী নিয়ে আসা একটি ইঞ্জিনচালিত ভ্যানের উপরে উঠে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ভ্যানের যাত্রী দুই শিশু ও ভ্যান চালক নিহত হন ও অজ্ঞাত (২৫) একজনসহ পাঁচ যাত্রী গুরুতর জখম হয়। পরে আহত অজ্ঞাত ব্যক্তি যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করলে সেখানেই মারা যান।
নিহতদের প্রতিবেশী অঞ্জলী খাতুন জানান, নিহত রাফান ইসলামের বাবা রবিউল ইসলাম ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। ঘটনার দিন রাফানকে ডাক্তার দেখাতে তার মা রাবিয়া খাতুন ও দাদি শিউলি বেগম একটি ইঞ্জিনচালিত ভ্যানে কোটচাঁদপুর শহরে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে কাশিপুর কলেজ মোড়ে পৌঁছালে দ্রুত গতির একটি পিকআপ ভ্যান তাদের ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই শিশুসহ ভ্যানচালক নিহত হন।
কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এসএম রমিজ উদ্দিন জানান, হাসপাতালে আসার আগেই ৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়া বাকি সবার অবস্থাই আশংকাজনক হওয়ায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে আরও দুইজন মারা গেছেন বলে শুনেছি।