নিজস্ব প্রতিবেদক : চালু আছে, তবে চলছে না যশোরের ১৬টি কিশোর-কিশোরী ক্লাব। দুই বছর অতিবাহিত হলেও ক্লাবের সব মেয়ে পায়নি পোশাক ও সরঞ্জাম। ক্লাব পরিচালনার দায়িত্বে থাকা দুই ফিল্ড সুপারভাইজারেরও দেখা মেলে না। ক্লাবের দায়িত্বে থাকা অধিকাংশ কো-অর্ডিনেটর ও শিড়্গক দায়িত্ব পালনেও নন আšত্মরিক । প্রথম দিকে ক্লাব সদস্যদের নাস্তা দেয়া হলেও, এখন তা বন্ধ। শিড়্গক ও কো- অর্ডিনেটরদের সম্মানীও হয়ে পড়েছে অনিয়মিত।
বিভিন্ন সৃজনশীল ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে কিশোর-কিশোরীদের সম্পর্ককে সুদৃঢ় করার মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনায়নের লড়্গ্েয ২০১৯ সালে সারা দেশের মতো যশোর সদর উপজেলায় চালু হয় কিশোর-কিশোরী ক্লাব। যশোর পৌরসভাসহ সদর উপজেলার ১৫ ইউনিয়নে মোট ১৬টি ক্লাব চালু করে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর। প্রতিটি ক্লাবে একজন করে সংগীত এবং আবৃত্তি শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। এছাড়াও আত¥রড়্গা কৌশল শেখার জন্য একজন দেওয়া হয় কারাতে শিড়্গক নিয়োগ। মাঠ পর্যায়ে ক্লাবের কর্মকাণ্ড দেখার জন্য দুই সুপারভাইজার দায়িত্ব পান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যশোর মহিলা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে ক্লাবের কর্মকাণ্ড দেখার জন্য দুজন ফিল্ড সুপারভাইজার আছেন। কিন্তু তাদেরকে কখনও অফিস ছেড়ে ফিল্ডে যেতে দেখিনি। কীভাবে ক্লাবের কাজ চলছে জানিনা।
প্রকল্পটি বা¯ত্মবায়নে কো- অর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করেন ১৬ জন সংরক্ষিত ইউপি সদস্য। প্রকল্পের নিয়মানুযায়ী প্রতিমাসে তাদের দুই হাজার টাকা করে সম্মানী দেওয়ার কথা থাকলেও গত এক বছরে (২০২২) কোনো টাকা পাননি তারা।
এ বিষয়ে ফিল্ড সুপারভাইজার মিতা মন্ডল বলেন, এক বছর হচ্ছে নারী ইউপি সদস্যদের সম্মানী বন্ধ রয়েছে। চালু হলে আবারও পাবে।’ তিনি আরও বলেন, সম্মানী বন্ধ থাকায় হাতেগোনা কয়েক জন ছাড়া; বেশির ভাগ কো- অর্ডিনেটর তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠানে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।
প্রকল্পের নিয়মানুযায়ী প্রতিটি কিশোর-কিশোরী ক্লাবে রয়েছে ২০ মেয়ে ও ১০ ছেলে। তাদের জন্য পোশাক ও যাবতীয় সরঞ্জাম কেনার টাকা উত্তোলিত হয়েছে দুই বছর আগে। কিন্তু কোনো ক্লাব সদস্য সরঞ্জাম পায়নি। প্রতি শুক্রবার ইউনিয়নের একটি শিড়্গাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাব কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
একটি সূত্রে জানা গেছে, ক্লাবগুলোতে ক্লাসের দিন শিক্ষকদের দৈনিক হাজিরা ৫০০ টাকা এবং সদস্যপ্রতি নাশতা বাবদ ৩০ টাকা থাকলেও অনুপস্থিত সদস্য ও শিক্ষকদের খরচের হিসাবে কোনো মিল নেই। শতভাগ উপস্থিতি দেখিয়ে টাকা আত¥সাৎ করা হয়।
আরবপুর ইউনিয়নের কিশোর- কিশোরী ক্লাবের আবৃত্তির শিড়্গক জাহিদুল ইসলাম জানান এ ক্লাবের মাধ্যমে এলাকার কিশোর- কিশোরীরা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সময় দিচ্ছে। তারা সামাজিক অবড়্গয় থেকে রড়্গা পাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিড়্গক জানান, প্রথম দিকে ক্লাবগুলো ভালোই চলছিল। কিন্তু এখন না¯ত্মাও দেয়া হয় না। সদস্যরাও তেমন একটা আসেন না। খোঁজ নিয়ে দেখেছি, বেশিরভাগ ক্লাবই ঠিকমত চলছে না।
যশোর জেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বলেন, এক বছর হচ্ছে নারী ইউপি সদস্যদের সম্মানী বন্ধ রয়েছে। চালু হলে আবারও তারা পাবেন । ফিল্ড সুপারভাইজার নিয়মিত মাঠ পর্যায়ে কাজ করেন। তবে প্রকল্প থেকে তাদের যানবাহন দেওয়ার কথা থাকলেও না দেওয়ায় তদারকী কাজ একটু বাধাগ্র¯ত্ম হচ্ছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে সদস্যদের পোশাকও দেওয়া হয়েছে নিয়ম মেনে। এ প্রকল্পের খারাপ কোনো দিক তার নজরে আসেনি। বরং কিশোর- কিশোরীরা উপকৃত হচ্ছে।