নয়ন খন্দকার, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) : মাঝ রাতে বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাতে মেহেদী হাসান (২৪) নামের এক যুবককে হত্যা করা হয়েছে। নিহত মেহেদী ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের ফয়লা মাস্টারপাড়ার হাজী মৃত সফোর আলীর ছেলে।
শনিবার দিনগত রাতে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত অভিযোগে আকরাম হোসেন (৩২) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আকরাম হোসেন একই এলাকার তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে। নিহত মেহেদী ও আটক আকরাম বন্ধু বলে পুলিশ জানিয়েছে।
নিহত মেহেদী হাসানের স্ত্রী আঁখি বেগম জানান, শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে পাশের বাসার আকরাম হোসেন তার স্বামীকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে যায়। এ সময় স্বামী মেহেদী হাসান বাইরে সিগারেট কিনতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। পরে তারা জানতে পারেন, বাড়িতে ডেকে নিয়ে আকরাম, তার ভাই সাদ্দাম ও তাদের বোন মিলে মেহেদী হাসানের গলায় ছুরিকাঘাত করে।
এ সময় মেহেদী হাসান জীবন বাঁচাতে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তার দিকে ছুটে আসলে তারা পিছু ধাওয়া করে। সে সময় মেহেদী হাসান রাস্তার উপর পড়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যায় বলে এলাকার এলাকাবাসী জানান।
তবে কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তার সঠিক তথ্য কেউ দিতে পারেননি। নিহত মেহেদী হাসানের ৩ মাস বয়সী আফরা নামের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। কয়েকদিন পরই মেহেদীর বিদেশে যাওয়ার কথা ছিল। এদিকে হত্যাকাণ্ডের পর আকরামের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বাড়ি-ঘরে তালা দিয়ে পালিয়েছে।
নিহত মেহেদী হাসানের মা সাবিয়া বেগম জানান, তিনি বাড়িতে ছিলেন না। মেয়ে অসুস্থ থাকায় তার বাড়িতে ছিলেন। ছেলে মেহেদী হাসানের হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে তিনি বাড়িতে এসে জানাতে পারেন মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে পাশের বাড়ির আকরাম ও সাদ্দাম দুই ভাই মিলে ছুরিকাঘাতে তার ছেলেকে হত্যা করেছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক শিশির কুমার জানান, হাসপাতালে আনার আগেই মেহেদী হাসানের মৃত্যু হয়েছে।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাবুবুর রহমান জানান, নিহত মেহেদি হাসান ও অভিযুক্ত আকরাম হোসেন সম্পর্কে বন্ধু। বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে মেহেদী হাসানের গলায় মধ্যে ছুরি ঢুকিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবে কেন কি কারণে তাকে মারা হয়েছে সে রহস্য এখনো উঘাটন করা যায়নি। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের মা সাবিয়া বেগম বাদী হয়ে সাদ্দাম হোসেন ও আকরাম হোসেনকে আসামি করে কালীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
ঘটনার সাথে জড়িত আকরাম হোসেনকে পুলিশ আটক করেছে। এছাড়া অপর আসামিকে গ্রেপ্তার, হত্যার রহস্য উদঘাটনে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। লাশের ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।