সমাজের কথা ডেস্ক : রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে ছাপাখানা ব্যবসায়ী নূর আলমকে হত্যার পর মরদেহ বাথরুমে নিয়ে দুই খণ্ড করে কর্মচারীরা। এরপর গুম করার উদ্দেশে খণ্ড দুটি পলিথিন ও কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে একটি বস্তায় ভরা হয়। শেষে ছাপাখানার ভেতর টেবিলের নিচের মেঝে খুঁড়ে বস্তাটি মাটিচাপা দেয় তারা। জায়গাটি বালু ও সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করে ফেলা হয়।
হত্যায় জড়িত তিন কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে আজ বুধবার এসব তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আজ রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে ঢাকা মহানগর পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার জসীম উদ্দিন বলেন, ব্যবসায়ী নূর আলম নিখোঁজ থাকার ঘটনা জানার পর কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ তদন্তে নামে এবং গোয়েন্দাতথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় জড়িতদের শনাক্ত করে। মঙ্গলবার নিহতের ছাপাখানা থেকে কর্মচারী মিরাজকে গ্রেপ্তার করা হয়। একইদিন কামরাঙ্গীরচরের ঝাউলাহাটি থেকে রিফাত এবং সদরঘাট এলাকা থেকে শিপনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত ৬ ডিসেম্বর ভোর আনুমানিক ৪টা ২৫ মিনিট থেকে পৌনে ৫টার মধ্যে গ্রেপ্তার তিনজন ও পলাতক জিহাদসহ অজ্ঞাতপরিচয়ে আরও ২–৩ জন এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। তারা ব্যবসায়ীর মাথায় হাতুড়ি ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরি দিয়ে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
উপকমিশনার জানান, পরে মঙ্গলবার গ্রেপ্তারকৃতদের দেখানো মতে পুলিশ ছাপাখানার মেঝের ঢালাই ভেঙে দ্বিখণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে। সেই সঙ্গে হত্যায় ব্যবহৃত হাতুড়ি ও ছুরিসহ অন্যান্য আলামত উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় নিহতের জামাতা আতাউল্লাহ খান সজিব বাদী হয়ে কামরাঙ্গীরচর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
কামরাঙ্গীরচর থানা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী নূর আলম কামরাঙ্গীরচর থানার হাসান নগরের ভাণ্ডারী মোড়ে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে ফেব্রিক্সে ছাপার ব্যবসা করে আসছিলেন। গত ৬ ডিসেম্বর ভোরে তিনি স্ত্রীকে ফোন করে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা জানান। ওই সময় স্ত্রী কয়েকজন লোকের সঙ্গে তাঁর স্বামীর বাগবিতণ্ডা শুনতে পান। এর পর থেকে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। কোথাও তাঁর সন্ধান না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশকে বিষয়টি জানান।