সমাজের কথা ডেস্ক : নারীরা আজ নিজ যোগ্যতায় এগিয়ে যাচ্ছেন। বৈদেশিক সম্পর্ক রক্ষার মতো জটিল ও স্পর্শকাতর বিষয়ও নারীরা সফল হাতে সামলাচ্ছেন। শুধু দেশে নয়, দেশের গন্ডি পেরিয়েও কূটনীতিতে অনেক নারী এগিয়ে যাচ্ছেন।
৫৩ বছরের বাংলাদেশে আপন শক্তিতে বলীয়ান হয়ে নারীরা নিজেদের নতুনভাবে নির্মাণ করেছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রমাণ রাখছে নিজের সক্ষমতার। শুধু নিজ দেশে নয়, দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও প্রতিনিয়ত প্রমাণ করে চলেছেন নিজেদের যোগ্যতাকে। তেমনই একজন নাহিদা সোবহান। মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের প্রথম নারী কূটনীতিবিদ। ২০২০ সাল থেকে জর্ডানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
<<আরও পড়তে পারেন>> যেসব খাবার বয়সের ছাপ দূর করবে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনকারী নাহিদা সোবহান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা। চাকরি জীবনে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ছাড়াও ইতালির রোম, জেনেভা ও কলকাতা বাংলাদেশ মিশনে কাজ করেছেন। এছাড়া তিনি দীর্ঘদিন অভিবাসন নিয়েও কাজ করেন।
ফরেন সার্ভিসে আসার ব্যাপারে নাহিদা সোবহান বলেন, আমার বাবা সব সময় তার দুই মেয়েকে পেশাদার হিসেবে তাদের ক্যারিয়ার গড়তে উৎসাহিত করতেন। আমার বড় বোন বিসিএস প্রশাসনে যোগ দেন। তিনি আমাকে ফরেন সার্ভিসে যোগ দিতে উৎসাহিত করেছিলেন। তার অনুপ্রেরণায় আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগদান করি।
কর্ম পরিবেশ নিয়ে তিনি বলেন, আমি ভাগ্যবান যে, আমি সব সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আমার সহকর্মীদের কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়েছি। যদিও আমি জানি যে, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে, তা বেসরকারি বা সরকারি কর্মক্ষেত্র হোক না কেন, নারীরা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ, বৈষম্য ও প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়। কিন্তু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আমি দেখেছি অফিসে কাজের পরিবেশ অনেক বেশি অনুকূল।
নাহিদা সোবহান আশা প্রকাশ করে বলেন, আমি বিশ্বাস করি আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশের নারীরা আরও ক্ষমতায়িত হবে এবং আগামী দিনে আমরা আরও অনেক নারী রাষ্ট্রদূত এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে দেখব।
একজন কূটনীতিকের চাকরি বিশ্বব্যাপী নারীদের জন্য কিছু অনন্য চ্যালেঞ্জ বহন করে। কাজ এবং পারিবারিক জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে, কূটনীতিকদের সন্তানদের জন্য কখনও কখনও এটি খুব হতাশাজনক এবং চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। এটি কূটনীতিক মায়েদের জন্য আরও কঠিন করে তোলে। তিনি বলেন, এরপরও বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন পূরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে একজন বাংলাদেশি হিসেবে আমি গর্বিত। আমি যখন বিদেশে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করি তখন আমি অত্যন্ত গর্বিত হই। আমি শুধু প্রার্থনা করি—তোমার পতাকা যারে দাও, তারে বহিবারে দাও শক্তি।
মুসলিম দেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কোনো চ্যালেঞ্জ আছে কিনা? এ প্রশ্নের উত্তরে নাহিদা সোবহান বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের যে কোনো দেশে নারী রাষ্ট্রদূত হওয়া একটি চ্যালেঞ্জ। তবে জর্ডান মধ্যপ্রাচ্যের একটি উন্নয়নশীল দেশ হলেও বাংলাদেশের মতোই প্রগতিশীল এবং নারীর ক্ষমতায়নে বদ্ধপরিকর। তাই দেশটিতে নারী রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করার প্রচুর সুযোগ রয়েছে।