নিজস্ব প্রতিবেদক : একটি অগোছালো স্বাধীনতাকামী জাতিকে নেতৃত্ব দিতে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল প্রবাসী সরকার গঠিত হয়; সে সরকারের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ১৭ এপ্রিল থেকে। ঘুমন্ত নিরীহ বাঙ্গালী জাতির ওপর ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি বাহিনীর নির্মম ও নির্বিচারে হত্যাকা-ের পরই ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এর পরই তাকে পাকিস্তানি স্বৈরশাসক গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে যায়।
এদিকে একটা অপ্রস্তুত নিরস্ত্র জাতিকে যার যার অবস্থান থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়। ১০ এপ্রিলের আগ পর্যন্ত অগোছালো এ যুদ্ধ চলছিলো। দরকার আন্তর্জাতিক সমর্থন, অর্থ, সহযোগিতা এবং যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া স্বাধীনতাকামী মানুষকে সঠিক নেতৃত্ব দিয়ে যুদ্ধের গতিপথ নির্ধারণ ও পরিচালিত করা। প্রবাসী সরকার সেই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে গঠিত হয়েছিল এবং সেই সরকারের নেতৃত্বে পরবর্তীতে সংঘটিত স্বাধীনতা যুদ্ধে মাত্র ৯ মাসে আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়।
সোমবার সকালে যশোর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ঐতিহাসিক মুজিব নগর দিবসের আলোচনায় বক্তারা এ সব কথা বলেন। জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে অমিত্রাক্ষর সভাকক্ষে ‘ঐতিহাসিক মুজিব নগর দিবস এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা’ শীর্ষক এই আলোচনাসভা হয়। এ সময় বক্তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০ এর নির্বাচন ও ’৭১ এর যুদ্ধের প্রেক্ষাপটসহ পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠির বিভিন্ন অগণতান্ত্রিক আচরণ, বৈষম্য নিয়ে আলোচনা করেন। সে সব ঘটনার প্রেক্ষিতে বাংলার স্বাধীনতার অপরিহার্যতার বিষয় উল্লেখ করে প্রবাসী সরকারের কর্মকা- ও নেতৃত্বের গুরুত্বের বিষয় তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের জেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন, পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার গণি খান পলাশ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান, প্রেসক্লাব যশোরের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক তহীদ মনি, সিনিয়র শিক্ষক লক্ষণ কুমার বিশ্বাস ও সাইদুজ্জামান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল হাসান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু নাছির, সৈয়দা তামান্না হোরায়রাসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান ও প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।
এদিকে, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী মহান স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সোমবার দুপুর ১২টায় শহরের বকুলতলাস্থ বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন, সহ-সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সহ-সভাপতি হুমায়ন কবির কবু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর জহুরুল ইসলাম, অ্যাড. মনিরুল ইসলাম মনির, উপ-দপ্তর সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম তরফদার, সদস্য আতিকুর রহমান বাবু, সামির ইসলাম পিয়াস প্রমুখ।
এদিকে, পৌর আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে। উপস্থিত ছিলেন, সভাপতি অ্যাড. আসাদুজ্জামান আসাদ, সাধারণ সম্পাদক এসএম মাহমুদ হাসান বিপু, সহ-সভাপতি আজিজুল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এসএম ইউসুফ শাহিদ, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক সেলিম কবীর, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদকে রবিউল ইসলাম রবি, কোষাধ্যক্ষ হাজী হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন রাজীব, সদস্য হালিমুল হক ফরাদ, আলী হোসেন, বাবুল, মিজানুর রহমান, ফিরোজ কবির, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নিয়ামত উল্লাহ। অন্যদিকে, শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস, সাধারণ সম্পাদক তানজিব নওশাদ পল্লবসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ঐতিহাসিক মুজিব নগর দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজ ও সরকারি মহিলা কলেজে মুজিব নগর দিবসে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অধ্যক্ষ প্রফেসর মর্জিনা আক্তারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক প্রফেসর এসএম শফিকুল ইসলাম, প্রফেসর আখতার হোসেন, অনুষ্ঠানের আহবায়ক সহযোগী অধ্যাপক ইখতিয়ার উদ্দীন, সহযোগী অধ্যাপক ভারতী রানী হালদার, সহকারী অধ্যাপক আব্দুল মমিন, প্রভাষক আজিজুর রহমান প্রমুখ। পরিচালনা করেন প্রভাষক মেহেদী হাসান।
যশোর সরকারি মহিলা কলেজে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অধ্যক্ষ প্রফেসর অমল কুমার বিশ^াস। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক প্রফেসর মাহবুবুল হক খান।
অনুষ্ঠানের আহবায়ক প্রফেসর আলাউদ্দীনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন প্রফেসর আব্দুল হান্নান, সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ আহসান হাবীব, সহযোগী অধ্যাপক নাসিরুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক গোলাম শাহরিয়ার প্রমুখ। দোয়া পরিচালনা করেন সহকারী অধ্যাপক হাসানুজ্জামান।