সাইফুল ইসলাম : মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট এসএসএসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন এই প্রথমবার এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। ফলাফল প্রকাশের পর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে। ফলা ফলের ভিত্তিতে যশোর শহরের সেরা ৫টি প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের উল্লাস করতে দেখা যায়। বন্ধের দিন এবং সবাই বোর্ডের পাঠানো ক্ষুদে বার্তায় ফল পাওয়ার পরও এত দিনের সহপাঠীদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে বিদ্যালয়ে হাজির হয়।
এ বছর এসএসসির ফলাফলে যশোর শহরে সেরা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষে রয়েছে যশোর পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১০৪ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই উত্তীর্ণ হয়েছে। এরমধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৮২ জন আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮১ জন। মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ১৫ জন আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬ জন। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৭ জন আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ জন।
পরের তালিকাটি যশোর জিলা স্কুল। এই বিদ্যালয় থেকে ২৪৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই উত্তীর্ণ হয়েছে। এরমধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষা দিয়েছিল ২৩১ জন আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৬৯ জন। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পরীক্ষার্থী ছিল ৫ জন এবং মানবিক বিভাগে পরীক্ষার্থী ছিলো ১১ জন এরমধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ জন।
যশোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২৪৮ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই উত্তীর্ণ হয়েছে।
এরমধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষা দিয়েছিল ১৯৮ জন আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪৫ জন। মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষা দিয়েছিল ৪০ জন আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৯ জন। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে পরীক্ষা দিয়েছিল ১০ জন, এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ জন।
যশোর কালেক্টরেট স্কুলে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১১১ জন আর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে ১১০ জন। এরমধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৬ জন।
যশোর শিক্ষা বোর্ড স্কুল এন্ড কলেজের মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৭২ জন। এর মধ্যে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে ১৭০ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০২ জন।
যশোর পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী সালমান আল ফারাজী বলেন, সারা বছর চেষ্টার ফলাফল পেয়েছি। আল্লাহ স্বপ্নটা পূরণ করেছে, এতে আমি ও আমার মা-বাবা খুবই খুশি। আমি ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই।
অপর শিক্ষার্থী তানিয়া হক জানায়, দশ বছরের ফলাফল আজ পেয়ে খুবই খুশি। আর শুক্রবার ছুটির দিন ফলাফল পাওয়ায় আজ বাবা-মায়ের সাথে আনন্দটা ভাগাভাগি করতে পারছি।
যশোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস জানায়, যে ফলাফলটা পেয়েছি সেটা দীর্ঘদিনের অপেক্ষা ও পরিশ্রমের ফল। একজন ভালো মানুষ হতে পারি সেই প্রত্যাশা।
একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইসরাত হোসেন ফায়জারের পিতা ইউনুস আলী বলেন, আজ সন্তান যে ফলাফল অর্জন করেছে এটা তার পরিশ্রম ও শিক্ষকদের সঠিক দিকনির্দেশনার ফল। তার এ ফলাফলে মেয়ের মা এবং আমিসহ সবাই খুশি।
ফলাফল নিয়ে যশোর পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনোতোষ কুমার নন্দী জানান, তার বিদ্যালয় থেকে এ বছর ১০৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলো এরমধ্যে ৮৯ জন জিপিএ-৫ সহ সবাই পাশ করেছে। আর এটা সম্ভব হয়েছে শিক্ষার্থীদের প্রচেষ্টা এবং বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকের সঠিক তদারকির ফলে। অতীতেও স্কুলটির ফলাফল গৌরব বহন করেছে।
যশোর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক শোয়াইব হোসেন বলেন, জেলা স্কুলের পাশের হার শতভাগ। এ স্কুলটি থেকে এবার ১৬৯ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। তারা ভবিষ্যৎ এ আরো ভালো ফলাফল করে সুন্দর দেশ গঠনে ভূমিকা রাখবে এ প্রত্যাশা। তিনি বলেন স্কুলটি জেলায় ঐতিহ্য বহন করে। দীর্ঘ বছরের পর বছর ধরে বিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীদেরকে কৃতিত্ব অর্জনের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।