১২ই ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৭শে অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মুক্তেশ্বরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়
‘এমপিকে খুশি করতে’ তিন বছরের পুরনো ভবন উদ্বোধন!

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোর সদর উপজেলার আরবপুর ইউনিয়নের মুক্তেশ্বরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৩ বছর ধরে ব্যবহৃত একটি ভবন রোববার উদ্বোধন হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদকে খুশি করতেই এ কাজ করা হয়েছে বলে দাবি করছেন অভিভাবকরা। তবে বিদ্যালয় কতৃর্পক্ষ স্বীকার করেছেন, তিন বছর ধরে ব্যবহৃত ভবন নতুন করতে লাখ টাকা ব্যয়ে চুনকাম করা হয়েছে।

শিক্ষার্থী—অভিভাবকরা বলছেন ‘শুধু সংসদ সদস্যের কাছ থেকে বাহবা পেতে এডহক কমিটির সভাপতি মীর ফিরোজ হাসান এ কাজ করেছেন। রোববার স্কুল আঙ্গিনায় এ অনুষ্ঠান হয়। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের অভিভাবক এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মুক্তেশ্বরী হাইস্কুলের সম্প্রসারিত একটি ভবন ৩ বছর আগেই নির্মাণ সম্পন্ন হয়। নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান যথাসময়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে ভবন হস্তান্তর করে। দীর্ঘদিন পর ওই ভবনের উদ্বোধন উপলক্ষে কিছু কিছু ক্ষেত্রে গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মীর ফিরোজ অনুসারী দলীয় কর্মী ও স্থানীয় নেতা ছাড়া সেখানে কোনো অভিভাবক ও শিক্ষার্থীকে রাখা হয়নি। বিদ্যালয়ের ৩ বারের এডহক কমিটির সভাপতি মীর ফিরোজ হাসান এ অনুষ্ঠানে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এমপি কাজী নাবিল আহমেদ। উদ্বোধন উপলক্ষে দ্বিতীয়তলায় চুনকাম করা হয়। এর বাইরে এমপিকে ক্রেস্ট প্রদান, হরেক রকম পিঠা দিয়ে আপ্যায়ন করানো এবং দুটো নামফলক তৈরি হয়েছে বলেও সূত্র জানিয়েছে। তাতেই লক্ষাধিক টাকা খরচ দেখানো হয়েছে।

অভিভাবক ও স্কুলের আশপাশের লোকজনের অভিযোগ, এমপি কাজী নাবিল আহমেদের মীর ফিরোজ দিন দিন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছেন। অনেক অনিয়মও এখন তার কাছে নিয়মে পরিণত হয়েছে। তিনি এমপির সুপারিশে ৩বার এডহক কমিটির সভাপতি হয়ে শিক্ষাবোর্ডের সকল বিধিবিধান লঙ্ঘন করেছেন। বিধি অনুযায়ী, একব্যক্তি দু’বারের বেশি এডহক কমিটির সভাপতি হতে পারবেন না। এডহক কমিটির সভাপতির কাজ কেবলমাত্র শিক্ষকদের বেতন বিলে স্বাক্ষর করা এবং ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করা। এর বাইরে তিনি আর কোনো কাজ করতে পারবেন না । অথচ মীর ফিরোজ কোনোকিছুর তোয়াক্কা না করে প্রধান শিক্ষক আব্দুল মাজেদকে নানভাবে চাপের মধ্যে রেখে এসব জায়েজ করে যাচ্ছেন।

স্থানীয়রা আরো অভিযোগ করেন, নানা কাজের কথা বলে স্কুল ফান্ড থেকে বিপুল পরিমাণ টাকাও হাতিয়ে নিয়েছেন সভাপতি। বর্তমানে শিক্ষকদের রুমের টেবিলে নিলামে বিক্রি করার চেষ্টা করছেন তিনি। টেবিল বিক্রি করে দিয়ে নতুন টেবিল কেনাসহ শিক্ষকদের রুম সাজিয়ে দেয়ার কথা বলেও বড় অঙ্কের টাকা হাতানোর চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এসব বিষয়ে বক্তব্য নিতে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি মীর ফিরোজ হাসানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরে বার বার ফোন দেয়া হয়। কিন্তু রিং হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি বলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মাজেদ জানান, খরচের সব ভাউচার এখনো এক জায়গায় করা হয়নি, তাই পরিমাণ এখনো নির্ধারিত হয়নি। তবে তিনি আপ্যায়ন, চুনকাম, মঞ্চ ও ক্রেস্ট তৈরি হয়েছে বলে জানান। এ সময় তিনি জানান, ভবনটি তিনি স্কুলে যোগদানের আগেই স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর হয়। নানা কারণে বর্তমান সভাপতির সাথে তার ঠিকমতো বনিবনা হচ্ছে না বলেও তিনি জানান। তবে তিনি বলতে পারেননি কেনো এত দিন পরে এই ভবনের উদ্বোধন করতে হবে। শিক্ষার্থী না থাকা নিয়ে তিনি বলেন, রোববার স্কুল বন্ধ ছিল, সভাপতি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীদের আসা লাগবে না। অভিভাবকদের না জানানোটাও সভাপতির বিষয় বলে তিনি জানান।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram