নিজস্ব প্রতিবেদক : এইচএসসি পরীড়্গার ফলাফলে যশোর বোর্ডে পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তি কমেছে। গতবছর সর্বোচ্চ ফলাফলে দেশসেরা অবস্থানে থাকলেও এবার সেই অবস্থান হারিয়েছে।
এইচএসসি-২০২১ এর ফলাফলে এই বোর্ডের পাসের হার ৮৩ দশমিক ৯৫। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮ হাজার ৭০৩ জন শিড়্গার্থী। এইচএসসি-২০২১ এর ফলাফলে দেশসো অবস্থানে থাকা এই বোর্ডের পাসের হার ছিল ৯৮ দশমিক ১১। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২০ হাজার ৮৭৮ জন শিড়্গার্থী।
ফলাফল অনুযায়ী, পাসের হার কমেছে ১৪ দশমিক ১৬ এবং জিপিএ-৫ প্রাপ্তি কমেছে ২ হাজার ১৭৫। যদিও করোনার কারণে ২০২১ সালের এইচএসসি পরীড়্গা মাত্র তিনটি বিষয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বুধবার দুপুরে প্রকাশিত ফলাফলে যশোর বোর্ডের এ চিত্র উঠে এসেছে।
যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিড়্গাবোর্ড’র পরীড়্গা নিয়ন্ত্রক (চলতি দায়িত্ব) সমীর কুমার কুন্ডু জানান, গতবছর (২০২১) সংড়্গপ্তি সিলেবাসে তিনটি বিষয়ে পরীড়্গা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
এবার (২০২২) আইসিটি ব্যতিত অন্য সব বিষয়ে পরীড়্গা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ কারণে পাসের হার বা জিপিএ-৫ প্রাপ্তি কিছুটা কমেছে। তবে এই ফলাফলে বোর্ড সন্তুষ্ট।
যশোর বোর্ডের প্রকাশিত ফলাফল থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের এইচএসসি পরীড়্গায় যশোর বোর্ড থেকে ৯৮ হাজার ২৬৯ জন শিড়্গার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৮২ হাজার ৫০১ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ৪০ হাজার ৮২১ জন এবং ছাত্রী ৪১ হাজার ৬৮০ জন। পাসের হার ৮৩ দশমিক ৯৫। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮ হাজার ৭০৩ জন। বহিষ্কৃত হয়েছে ৯ জন।
এর আগে ২০২১ সালের এইচএসসি পরীড়্গায় যশোর বোর্ড থেকে ১ লাখ ২৮ হাজার ১৬৩ জন শিড়্গার্থী অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছিল ১ লাখ ২৫ হাজার ৭৪১ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ৬৪ হাজার ১০৬ জন এবং ছাত্রী ৬১ হাজার ৬৩৫ জন। পাসের হার ছিল ৯৮ দশমিক ১১। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২০ হাজার ৮৭৮ জন। বহিষ্কৃত হয় ৩ জন।
করোনা মহামারীর কারণে ২০২০ সালে এইচএসসি পরীড়্গা গ্রহণ সম্ভব হয়নি। কোভিড-১৯ জনিত বৈরী পরিস্থিতির কারণে শিড়্গা মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত ‘এইচএসসি পরীড়্গার ফলাফল প্রণয়ন সংক্রাšত্ম পরামর্শক কমিটি’র সুপারিশ অনুসারে এবং বোর্ড কমিটির অনুমোদন সাপেড়্গে ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
ওই পরীড়্গার জন্য ২০২০ সালে যশোর বোর্ড থেকে ১ লাখ ২১ হাজার ৫২৮ জন শিড়্গার্থী এইচএসসি পরীড়্গার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছিল। করোনা ভাইরাসের কারণে পরীড়্গা গ্রহণ সম্ভব না হওয়ায় ঘোষণা অনুযায়ী এদের সবাইকে উত্তীর্ণ করা হয়। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ছিল ৬১ হাজার ৭৬১ জন এবং ছাত্রী ৫৯ হাজার ৭৬৭ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১২ হাজার ৮৯২ জন।
এর আগে ২০১৯ সালে যশোর বোর্ড থেকে ১ লাখ ২৬ হাজার ২২৯ জন শিড়্গার্থী এইচএসসি পরীড়্গায় অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছিল ৯৫ হাজার ৪৯৫ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ৪৭ হাজার ৪৪২ জন এবং ছাত্রী ৪৮ হাজার ৫৩ জন। পাসের হার ছিল ৭৫ দশমিক ৬৫। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৫ হাজার ৩১২ জন। বহিষ্কৃত হয়েছিল ৬০জন।
২০১৮ এই বোর্ড থেকে ১ লাখ ৯ হাজার ৬৯২ জন শিড়্গার্থী এইচএসসি পরীড়্গায় অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয় ৬৬ হাজার ২৫৮ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ছিল ৩১ হাজার ৬৫২ জন এবং ছাত্রী ৩৪ হাজার ৬০৬ জন। পাসের হার ৬০ দশমিক ৪০। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২ হাজার ৮৯ জন। বহিষ্কৃত হয়েছিল ৪৭ জন।
২০১৭ সালে এই বোর্ড থেকে ৯৫ হাজার ৬৯২ জন শিড়্গার্থী এইচএসসি পরীড়্গায় অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছিল ৬৭ হাজার ২ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ৩৩ হাজার ৮০৮ জন এবং ছাত্রী ৩৩ হাজার ১৯৪ জন। পাসের হার ছিল ৭০ দশমিক ০২। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২ হাজার ৪৪৭ জন। বহিষ্কৃত হয়েছিল ৫৬ জন।
২০১৬ সালে এই বোর্ড থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার ৫৭২ জন শিড়্গার্থী এইচএসসি পরীড়্গায় অংশ নিয়ে পাশ করেছিল ১ লাখ ৮ হাজার ৯২৯ জন। পাশের হার ছিল ৮৩ দশমিক ৪২ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৪ হাজার ৫৮৬ জন। পরীড়্গায় বহিষ্কৃত হয়েছিল ৮১ হন।
শিড়্গাবোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর যশোর বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৭ হাজার ৭৪৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৬ হাজার ৬৪৭ জন। পাসের হার ৯৩ দশমিক ৮০ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮ হাজার ৯৬২ জন। মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৬৭ হাজার ৬৭২ জন। উত্তীর্ণ হয়েছে ৫৪ হাজার ৫৫৯ জন। পাসের হার ৮০ দশমিক ৬২ ভাগ।
এই বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ হাজার ৭৫২ জন। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ১২ হাজার ৮৫০ জন ছাত্র ছাত্রীর মধ্যে পাস করেছে ১১ হাজার ২৯৫ জন। পাসের হার ৮৭ দশমিক ৯০ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৯৮৯ জন ছাত্র ছাত্রী।
এবারের ফলাফলের চিত্র তুলে ধরে যশোর শিড়্গাবোর্ডের পরীড়্গা নিয়ন্ত্রক (চলতি দায়িত্ব) সমীর কুমার কুন্ডু জানান, বিগত এইচএসসি পরীড়্গায় (২০২১) করোনা মহামারি কারণে প্রত্যেক বিভাগের শিড়্গার্থীদের তিনটি বিষয়ে পরীড়্গা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এ জন্য শিড়্গার্থীরা সংশিস্নষ্ট বিষয়ে অনেক সময় ধরে প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ পেয়েছিল।
এবছর আইসিটি ব্যতিত অন্য সকল বিষয়ে সংড়্গপ্তি সিলেবাসে পরীড়্গা অনুষ্ঠিত হয়েছে। একারণে গতবারের তুলনায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তি কিছুটা কমেছে। তবে এই ফলাফলে তারা সন্তুষ্ট। ভবিষ্যতে ফলাফল আরও ভাল করার জন্য বোর্ডের যেসব পদড়্গপে রয়েছে সেগুলো অব্যাহত রেখে ফলাফলকে আরও ভাল অবস্থানে নিয়ে যেতে চান তারা।