নিজস্ব প্রতিবেদক : দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি গুদামের চাল আত্মসাতের মামলায় নড়াইলের উপ—খাদ্য পরিদর্শক ইসমাইল মৃধাকে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছে যশোরের একটি আদালত। বুধবার স্পেশাল জজ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সামছুল হক এক রায়ে এ আদেশ দিয়েছেন।
সাজাপ্রাপ্ত ইসমাইল মৃধা লক্ষীপুর রায়পুর উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের আব্দুল্লাহর ছেলে ও নড়াইলের লোহাগড়ার নলদী খাদ্য গুদামের সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ—খাদ্য পরিদর্শক ও যশোরের অভয়নগরের নওয়াপাড়া হাসপাতাল রোডের বাসিন্দা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট আশরাফুল আলম বিপ্লব।
<<আরও পড়তে পারেন>> ৬ মাসের কারাদণ্ড ড. ইউনূসের
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০০১ সালের ১৫ জুলাই উপ—খাদ্য পরিদর্শক ইসমাইল হোসেন নলদী খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তর্া হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৫ সালের ২৫ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত গুদামে সাপ্তাহিক সমাপনী মজুদ ছিল ৯৭ দশমিক ৫২০ মেট্রিকটন চাল। ১ এপ্রিল থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত গুদামের সাপ্তাহিক মজুদ প্রতিবেদনে ২৭ দশমিক ৫২০ মেট্রিক টন চাল দেখানো হয়।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেনের হিসাব অনুযায়ী ৭০ মেট্রিক টন চালের হিসাবে গড়মিল পাওয়া যায়। যার দাম ১১ লাখ ৫৬ হাজার ১০৮ টাকা। এ ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায় ইসমাইল হোসেন ৭ এপ্রিল গুদামের রেজিস্টার—পত্র নিয়ে বাসায় চলে গেছেন। পরের দিন তিনি লেবার সর্দারের কাছে রেজিস্ট্রার—পত্র পাঠিয়ে দিয়ে তিনি অফিসে অনুপস্থিত থাকেন।
এ ঘটনায় ৯ এপিল লোহাগাড়া উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা শুধাংশু হাওলাদার বাদী হয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেনকে আসামি করে লোহাগাড়া থানায় মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ইসমাইল হোসেনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুভাষ চন্দ্র দাস।
পরবর্তীতে এ মামলার অধিকতর তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক সৌরভ দাশ দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করে ২০১৭ সালের ২৬ মার্চ ইসমাইল হোসেনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন।
এ মামলার দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৪০৯ ধারায় চার বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড, ৪৭৭ /এ/ ধারায় তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ দমন আইনের ৫ /২/ ধারায় তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত ইসমাইল হোসেন কারাগারে আটক আছে।