১১ই ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ইসলামাবাদের ডি-চকে ইমরান খানের সমর্থকরা।
ইসলামাবাদে পুলিশ ও পিটিআই দফায় দফায় সংঘর্ষ

সমাজের কথা ডেস্ক :পাকিস্তানে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থকরা ইসলামাবাদের ডি-চকে পৌঁছেছেন। বুশরা বিবির নেতৃত্বে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) গাড়িবহর শহরের জিরো পয়েন্টের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এলাকাটি ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এ খবর জানিয়েছে।

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সংবিধানের ২৪৫ অনুচ্ছেদের অধীনে ইসলামাবাদে নিরাপত্তা জোরদার করতে সেনাবাহিনী মোতায়েনের ঘোষণা দেয়। এক্সপ্রেস নিউজ জানিয়েছে, এই পদক্ষেপটি পিটিআইয়ের বিক্ষোভের পর সহিংসতার প্রেক্ষাপটে নেওয়া হয়েছে।

ইসলামাবাদ জিরো পয়েন্ট এলাকায় পুলিশ ও পিটিআই কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনগুলিতে রেঞ্জার মোতায়েন করা হয়েছে। সেনা সদস্যরা ডি-চকের আশেপাশে অবস্থান নিয়েছেন।

টিয়ার গ্যাসের কারণে আবপারা চকে ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাওয়ালপিন্ডি থেকে অতিরিক্ত এক হাজার পুলিশ সদস্যকে ইসলামাবাদে পাঠানো হয়েছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নিরাপত্তা বাহিনীকে কড়া নির্দেশনা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রেডিও পাকিস্তানের প্রতিবেদন অনুসারে, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে গুলি চালানোর অনুমতিও দেওয়া হয়েছে।

ইসলামাবাদের শ্রীনগর হাইওয়েতে মঙ্গলবার সকালে রেঞ্জার সদস্যদের উপর একটি গাড়ি উঠিয়ে দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় চার রেঞ্জার ও দুই পুলিশ সদস্য নিহত হন বলে রাষ্ট্র পরিচালিত রেডিও পাকিস্তান জানিয়েছে।

এদিকে রাওয়ালপিন্ডির একটি এলাকা,চুঙ্গি নম্বর ২৬-এ বিক্ষোভকারীদের ছোঁড়া পাথর ও গুলিতে এক রেঞ্জার আহত হয়েছেন। তাকে গুরুতর অবস্থায় রাওয়ালপিন্ডি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যেকোনও এলাকায় কারফিউ জারি করার ক্ষমতা সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য এই পদক্ষেপ প্রয়োজনীয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

নিরাপত্তা বাহিনীর এক সূত্র জানিয়েছে, সহিংসতা রোধ ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি সতর্ক করে বলেছেন, ডি-চকে মিছিল করার চেষ্টা করলে পিটিআইয়ের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

তিনি বলেন, পিটিআই তাদের অস্থিতিশীল অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য সহিংসতার আশ্রয় নিতে চায়। কিন্তু তাদের সেই সুযোগ দেওয়া হবে না।

বিক্ষোভকারীদের প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যথেষ্ট সংযম দেখিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, পুলিশ যদি বিক্ষোভকারীদের গুলির জবাবে গুলি চালাত, তবে তারা পাথরগড়ও পেরোতে পারত না।

এদিকে, পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের সঙ্গে আদিয়ালা কারাগারে ৯০ মিনিটের একটি বৈঠক করেছেন ব্যারিস্টার গোহর খান ও সাইফ। বৈঠকের পর ব্যারিস্টার গোহর সাংবাদিকদের জানান, ইমরান খানের বিক্ষোভের ডাক চূড়ান্ত ও তা বাতিলের গুজব ভিত্তিহীন।

তিনি বলেন, ইমরান খানের সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত রয়েছে। পিটিআই পরিকল্পনা অনুযায়ী আন্দোলন চালিয়ে যাবে। বৈঠকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও দলের ভবিষ্যৎ কৌশল নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

আন্দোলন নিয়ে আলোচনার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে গোহর খান জানান, সময়মতো সব জানানো হবে।

ইমরান খানসহ সব রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তিসহ চার দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে পিটিআই। নভেম্বর ১৩ তারিখে ইমরান খান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টের মাধ্যমে জনগণকে ইসলামাবাদে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।

বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর পাকিস্তান সফরের প্রেক্ষাপটে ও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্ভাব্য সংঘর্ষ ঠেকাতে সরকার ইসলামাবাদে প্রবেশের সব প্রধান সড়ক কনটেইনার দিয়ে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কঠোর পুলিশ ও রেঞ্জার্স মোতায়েন সত্ত্বেও, অনেক পিটিআই কর্মী বাধা ভেঙে ও নিষেধ উপেক্ষা করে রাজধানীর দিকে অগ্রসর হন। সারাদিন জুড়ে পিটিআই কর্মী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে পাঞ্জাবের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ ঘটে।

ফলে রাজধানী ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিন্ডি শহরসহ পাঞ্জাবের বেশ কয়েকটি শহরের জীবনযাত্রা অচল হয়ে পড়েছে।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, পার্লামেন্টে পিটিআইয়ের চিফ হুইপ আমির দোগর ও জাইন কুরেশিসহ বেশ কয়েকজন নেতাকে মুলতান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাঞ্জাব পুলিশ জানিয়েছে, ১৪৪ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০০ জনকে আটক করা হয়েছে।

রবিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি ঘোষণা করেছিলেন, বিক্ষোভকারীদের ইসলামাবাদের বাইরে আটকে রাখা হবে। তিনি ইসলামাবাদ, রাওয়ালপিন্ডি ও অ্যাটকের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে হেলিকপ্টারে ভ্রমণ করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুসারে শান্তি ও জনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ, ফ্রন্টিয়ার কোর (এফসি) ও রেঞ্জার্স তাদের দায়িত্ব পালনে সক্রিয় রয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেছেন, নাগরিকদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষায় সরকার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram