সমাজের কথা ডেস্ক : অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলার গতকাল ৮৫তম দিন অতিবাহিত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ১৬৫ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ২৫০ জন। অন্যদিকে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনারা ১৪ জনকে ধরে নিয়ে গেছে। এ পর্যন্ত নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৬৭২ জনে। আহত হয়েছেন ৬৫ হাজার ১৬৫ জন— যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, মধ্য ডিসেম্বর পর্যন্ত ইসরায়েল গাজায় ২৯ হাজার বোমা মেরেছে। এতে গোটা উপত্যকার প্রায় ৭০ ভাগ বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় প্রায় ৪ লাখ ৩৯ হাজার ভবন রয়েছে— এর মধ্যে ইসরায়েলের হামলায় প্রায় ৩ লাখ ভবন পুরোপুরি বা আংশিক বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইসরায়েলের বোমা মানুষ মারার পাশাপাশি অবকাঠামোর মারাত্মক ক্ষতি করেছে। বাইজেনটাইন চার্জ, প্রাচীন মসজিদ, শিল্প কারখানা, শপিংমল, হোটেল, নাট্যশালা এমনকি স্কুলেও বোমা ফেলেছে ইসরায়েল। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পানি, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ ও স্বাস্থ্যখাতে ক্ষয়ক্ষতি মেরামত করা যাচ্ছে না।
এদিকে ইসরায়েল সম্প্রতি দক্ষিণ গাজায় হামলা জোরদার করেছে। সেখান থেকে বহু হতাহতে খবর আসছে। খান ইউনিসে ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে হামাস যোদ্ধাদের তীব্র লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি ট্যাংক ও যুদ্ধ বিমানগুলো শুক্রবার রাতভর খান ইউনিসে তীব্র গোলাবর্ষণ ও বোমা হামলা চালিয়েছে। গোলাগুলির শব্দে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে হামাসের যোদ্ধাদের লড়াই হচ্ছে। ফিলিস্তিনি সাংবাদিক ও চিকিৎসা কর্মীরা জানিয়েছেন, গাজার মধ্যাঞ্চলে নুসেরাত শরণার্থী শিবিরেও ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো ধারাবাহিক হামলা চালিয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওভ গ্যালান্ট জানিয়েছেন, ইসরায়েলি সেনারা হামাসের কমান্ড সেন্টার ও অস্ত্র গুদামগুলোতে হাজির হচ্ছে। দেশটির সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গাজা সিটিতে গাজার হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের এক বাড়ির নিচে একটি টানেল কমপ্লেক্সও ধ্বংস করেছে তারা। ইসরায়েলের হামলার মুখে গাজাবাসী মারাত্মক বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে। জাতিসংঘসহ বিশে^র মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো বারবার সতর্ক করছে, গাজা খাদের কিনারে রয়েছে, গাজায় কোনো নিরাপদ আশ্রয় নেই।