সমাজের কথা ডেস্ক : ইসরায়েলিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কন যুক্তরাষ্ট্র। বাইডেন প্রশাসন জানিয়েছে, অবরুদ্ধ পশ্চিম তীরে বসবাস করা যেসব ইসরায়েলি সহিংসতার সঙ্গে জড়িত তাদের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা দেওয়া হবে না। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালায় মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের গোষ্ঠী হামাস। এতে ১৪০০ ইসরায়েলি নাগরিক প্রাণ হারায় জবাবে গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। বিমান হামলা ও স্থল অভিযানে ১৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ২৫ হাজারেরও বেশি। তাদের বেশিরভাগই বেসামরিক। সামরিক হতাহত এড়াতে বিশ্বজুড়ে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হচ্ছিল। হামাসের পক্ষ থেকেও প্রথম এমন আভাস মিলে মঙ্গলবার। ২২ নভেম্বর মধ্যস্থতাকারী কাতার জানায়, বেশ কিছু শর্ত মেনে দুই পক্ষ রাজি হয়েছে। দুই দফায় বাড়া সেই যুদ্ধবিরতি শেষ হয় শুক্রবার। এরপর থেকেই গাজায় হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল।
তবে এই সময়ে পশ্চিম তীরে সহিংসতা থেমে নেই। প্রতিদিনই সেখান থেকে ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর খবর আসছে। এই সহিংসতায় অবৈধভাবে বসবাসকারী ইসরায়েলিরাও জড়িয়ে পড়ছে বলে জানা গেছে। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, উগ্র যেসব ইসরায়েলি বসবাসকারী সেখান শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করবে, তাদের ভিসা নিষেধাজ্ঞার দেওয়া হবে।
গত কয়েক সপ্তাহে পশ্চিম তীরে বসবাসরত ফিলিস্তিনিরা বিবিসিকে জানাচ্ছিল যে ইসরায়েলি সেটেলাররা আরও ভূমি দখলের জন্য গাজার যুদ্ধকে ব্যবহার করছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এ পদক্ষেপকে বসতি স্থাপনকারীদের প্রতি ইসরায়েল সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হতাশার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইউসেফ বুন্ডেল বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ আসলে যুদ্ধে ইসরায়েলের সমর্থন থেকে কিছুটা সরে যাওয়া। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আসলে বলতে চাইছে ‘যথেষ্ট হয়েছে।’ যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ তারই বহিঃপ্রকাশ।
তবে একে খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখতে নারাজ যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিংক ট্যাংক ফেলোশিপ অব রিকনসিলিয়েশন এর নির্বাহী পরিচালক অ্যারিয়েল গোল্ড। তিনি বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না। কারণ পশ্চিমতীরে বসবাসকারী অনেক ইসরায়েলির যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব রয়েছে। তাদের সেখানে যেতে ভিসার প্রয়োজন পড়বে না।