সমাজের কথা ডেস্ক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হলে দেশকে ৮টি প্রদেশে ভাগ করতে চায় জাতীয় পার্টি (জাপা)। ২১ ডিসেম্বর দুপুর ১২টায় জাপা চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে ২৪ দফার ইশতেহার প্রকাশকালে এ কথা জানান দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। এবারের নির্বাচনে তাদের স্লোগান, ‘শান্তির জন্য পরিবর্তন, পরিবর্তনের জন্য জাতীয় পার্টি’।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, ‘দেশে বিদ্যমান আট বিভাগকে আটটি প্রদেশে উন্নীত করা হবে। প্রদেশগুলোর নাম হবে— উত্তরবঙ্গ প্রদেশ, বরেন্দ্র প্রদেশ, জাহাঙ্গীরনগর প্রদেশ, জালালাবাদ প্রদেশ, জাহানাবাদ প্রদেশ, চন্দ্রদীপ প্রদেশ, ময়নামতি প্রদেশ এবং চট্টলা প্রদেশ।’
জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় গেলে দুই স্তরবিশিষ্ট সরকার কাঠামো করা হবে বলে জানান মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা চালু করা হবে। কেন্দ্রীয় সরকারকে বলা হবে ফেডারেল সরকার। এই সরকারের অধীনে থাকবে ৩০০ আসন বিশিষ্ট জাতীয় সংসদ। আর প্রাদেশিক সরকারের অধীনে থাকবে প্রাদেশিক সংসদ। প্রতি উপজেলা কিংবা থানাকে প্রাদেশিক সরকারের এক একটি আসন হিসেবে বিবেচনা করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘নব্বইয়ের প্রেক্ষাপটে পরিবর্তনের পর বিগত ৩৩ বছর দেশের মানুষ ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলোর সীমাহীন দুর্নীতি, দলীয়করণ, জনগণের সম্পদ আত্মসাৎ এবং অর্থপাচার দেখে আসছে। যার ফলে গণতন্ত্রকামী মানুষ তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দুর্নীতিমুক্ত সমাজ, দলীয় প্রভাবমুক্ত প্রশাসন, সুশাসন ও অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়। বাস্তবে বিগত শাসকরা তার প্রতিফল দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে।’
চুন্নু বলেন, ‘গণতন্ত্রকে অর্থবহ করতে হলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম করতে হবে। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে।’
তাদের ইশতেহারে আরও রয়েছে নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার, পূর্ণাঙ্গ উপজেলা ব্যবস্থা প্রবর্তন, সুশাসনের বাংলাদেশ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও মামলাজটের অবসান, শিক্ষিত/অশিক্ষিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণ, শিক্ষাপদ্ধতির সংশোধন, সন্ত্রাস দমন ও মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা, ইসলামের আদর্শ ও ধর্মীয় মূল্যবোধ, সর্বোচ্চ ভর্তুকি দিয়ে কৃষকের কল্যাণ সাধন, খাদ্যনিরাপত্তা, নদী সংরক্ষণ ও ভাঙনরোধে ব্যবস্থা, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে স্থিতিশীলতা, শিল্প ও অর্থনীতির অগ্রগতি সাধন, ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর স্বার্থ সংরক্ষণ, পররাষ্ট্রনীতিতে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, নারী সমাজের কল্যাণ সাধন, জলবায়ু পরিবর্তন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান—মুদ্রানীতি—রাজস্বনীতির সংস্কার, গুচ্ছগ্রাম পথকলি ট্রাস্ট পুনঃপ্রতিষ্ঠা, রেশনিং চালু, যোগাযোগ ব্যবস্থার সংস্কার ও অভিবাসন।