১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ইবনে সিনার ভুল রিপোর্টে মৃত্যুমুখে শিশু!
ইবনে সিনার ভুল রিপোর্টে মৃত্যুমুখে শিশু!
698 বার পঠিত


এস হাসমী সাজু : হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের মত একটি স্পর্শকাতর রোগের টেস্ট রিপোর্ট প্রদানে কা-জ্ঞানহীন আচরণ করেছে ইবনে সিনা হসপিটাল এন্ড ডায়গনস্টিক সেন্টার। রক্ত পরীক্ষার পর হেপাটাইটিস পজিটিভ রিপোর্ট দিয়ে এক শিশু রোগীকে জীবন্ত অবস্থায় ‘মৃত’ ঘোষণার মত আচরণ করা হয়। অন্য দুটি হাসপাতালে একই শিশুর রক্ত পরীক্ষায় ‘নেগেটিভ’ রিপোর্ট আসে। রোগীর স্বজনরা বিষয়টি ইবনে সিনা কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা আরো বালখিল্য আচরণ করে। নতুন পরীক্ষা ছাড়াই ‘নেগেটিভ’ লিখে নতুন একটি রিপোর্ট সরবরাহ করে। একই হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা একই রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট কিভাবে পজেটিভ ও নেগেটিভ দুটোই হতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে জ্বর ও খাবারের অরুচি নিয়ে ১১ মে ভর্তি হয় ধর্মতলা এলাকার বাবুল আক্তারের মেয়ে তাসনিয়া আক্তার(১২)। চিকিৎসকরা তার রোগ নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা দেয়। যার মধ্যে হেপাটাইটিস বি ভাইরাসও ছিল। হেপাটাইটিস বি ভাইরাসসহ ৮ ধরনের পরীক্ষার জন্য যান ইবনে সিনা হাসপাতালে। ১৪ মে ১১টায় রক্ত সংগ্রহ করে ২টা ১২ মিনিটে রিপোর্ট সরবরাহ করে। সেখানে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস পজেটিভ উল্লেখ করা হয়।

এ রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রেডএ্যালার্ট জারি করে। ১২ বছরের শিশুকে সবার থেকে আলাদা করে দেন। কেননা রিপোর্ট অনুযায়ী তার যে রোগ হয়েছে সেটি মুখের লালার মাধ্যমে ছড়াই। ডাক্তাররা হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের চিকিৎসাও দিতে থাকেন। অ্যান্টিবায়োটিকসহ বেশকিছু ওষুধ সেবন করানো হয়। এতেই শিশুটির শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হয়। তখন চিকিৎসকরা আবারো টেস্ট করতে বলেন। অভিভাবকরা যশোরের দুটি বড় ডায়াগনস্টিক থেকে পরীক্ষা করান। দুটিতেই রিপোর্ট আসে নেভেটিভ। স্বস্তি পায় চিকিৎসক ও রোগীর অভিভাবকরা। সবার থেকে আলাদা থাকার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পায় শিশুটি।

শিশুর অভিভাবকরা ওই দুই ডায়াগনস্টিকের রিপোর্ট নিয়ে দেখান ইবনে সিনা কর্তৃপক্ষের কাছে। তারা কোন পরীক্ষা না করেই ১৬ মে সন্ধ্যায় নতুন একটি রিপোর্ট সরবরাহ করেন। যাতে ওই দুই হাসপাতালের রিপোর্ট কপি করে লেখা হয় নেভেটিভ।
শিশুর বাবা বাবুল আক্তার অভিযোগ করে বলেন, রিপোর্ট অনুযায়ী চিকিৎসক শিশুটির চিকিৎসা ব্যবস্থা শুরু করেন। শিশুকে ওয়ার্ডের মধ্যে আলাদা রাখা হয়। স্বজনদের কাছে যেতে বাধা দেয়া হয়। এমনকি সেবিকারা শিশুর কাছে যেয়ে ওষুধ দেওয়ার সময় হাতের গ্লাভস পরে গেছেন। আমরা সাবই মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ি। আমার মেয়ে আরো বেশি কাহিল হয়ে পড়ে।


যশোর মেডিকেল কলেজের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আব্দুস সামাদ জানান, ইবনে সিনার এত বড় ভুল মেনে নেওয়া যায় না। তাদের ভুল রির্পোটের কারণে একটি শিশুর জীবন যায়-যায় অবস্থা।


এ ব্যাপারে ইবনে সিনা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের উপ-পরিচালক ডাক্তার মোহাম্মাদ আলী বলেন, শিশুটির বাবা অভিযোগ করেছেন। আসলে ওয়ার্ড বয়ের ভুল। তারা ল্যাব থেকে অসমাপ্ত রিপোর্ট সরবরাহ করেছে। ভুল রিপোর্ট সরবরাহের জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন তাদের ল্যাবেও একই পরীক্ষার রিপোর্ট হেপাটাইটিস(নেগেটিভ) শনাক্ত হয়। তাই স্বজনদের কাছে ওই রিপোর্ট মঙ্গলবার সরবরাহ করা হয়েছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram