হুমায়ুন কবির, বাঘারপাড়া (যশোর) : দুই দিন আগেও বাতাসে দোল খাচ্ছিল সবুজ ধান গাছ। কৃষকের স্বপ্ন ছিল এ ধানকে ঘিরে। কিন্তু গত রোববার ইটভাটার আগুনের তাপে সে স্বপ্ন পুড়ে শেষ হয়ে গেছে। ঘটনাটি যশোরের বাঘারপাড়ার দোহাকুলা মাঠের ফাইভ স্টার ব্রিক্সে’র পাশে।
ইটভাটার আগুনের তাপে প্রায় দুশ’ বিঘা জমির উঠতি ফসল চলতি আমন মৌসুমের ধানের ক্ষেত পুড়ে গেছে। ধানগুলো লালচে হয়ে পুড়ে গেছে। বিশাল এলাকাজুড়ে ধানের গাছ দেখা গেলেও সেগুলো লালচে হয়ে গেছে।
কোথাও কোথাও শীষসহ পুরো গাছই পুড়ে গেছে। ফলে ওই এলাকার কৃষকরা এবার সম্পূর্ণরূপে আমন ফসল থেকে বঞ্চিত হবেন। এ ঘটনা পর উপজেলা নিবার্হী অফিসার ও কৃষি কর্মকতার্র কাছে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা অভিযোগ করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত মাঠ উপজেলা নিবার্হী অফিসার ও কৃষি কর্মকতার্ পরিদর্শন করেছেন। কৃষকদের সাথে কথা বলেছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আমিনুর, সোহেল, মিজানুরসহ একাধিক চাষির সাথে কথা বলে জানাগেছে, ইট পোড়ানোর শেষ পর্যায়ে এসে দ্রুত ইটের ভাটা ঠান্ডা করতে ভাটার মালিক রোববার রাতে চুলার মুখ খুলে দেন। এতে রাতে ভাটার আগুন ৩০ থেকে ৪০ হাত উপরে উঠে যায়। এসময় ভাটার উত্তর ও উত্তরপশ্চিম পাশের কমপক্ষে ২শ’ বিঘা জমির আমন ধানের পাতাসহ গাছ পুড়ে গেছে। কমপক্ষে ১৫০ কৃষকের আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে। মাঠের বেশির ভাগ জমিতে গুটিস্বর্না ও হাবু ধানের চাষ রয়েছে।
উপজেলার দোহাকুলা ইউনিয়নের কৃষক ইকবাল হোসেন জানান, ‘অনেক টাকা খরচ করে ছয় বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছিলাম। কিছুদিনের মধ্যে ধানের মোচা আসা শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু এর আগেই পাশের ফাইভ স্টার ইটভাটার ধেঁায়ায় এলাকার সব ক্ষেতের ধান পুড়ে গেছে। আমরা চরমভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছি।
কৃষক বাদশা মিয়া অভিযোগ করে বলেন, তিনি এবার এ মাঠে দুই বিঘা জমিতে হাবু ধান চাষ করেছেন। ইটভাটার আগুনে এতবড় ক্ষতি হলো। ইটভাটা হওয়ার পর থেকে এখানে চাষাবাদে সমস্যা হচ্ছে। এখান থেকে ইটভাটার অপসারণ চাই।
ইটভাটার মালিক শাহিন হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সায়েদা নাসরিন জাহান জানান, ‘সরেজমিনে ঐ মাঠ পরিদর্শন করা হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রণোদনা আওতায় আনার ব্যবস্থা করা হবে।
বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসনে আরা তান্নি বলেন, ইটভাটার আগুনের কারণেই ধানগাছ পুড়ে গেছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ভাটা মালিকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।