নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরের শামস্-উল-হুদা ফুটবল একাডেমি খেলোয়াড় তৈরির সুতিকাগৃহ। একাডেমীর ফুটবলাররা নজর কাড়ছে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ক্লাবের। সম্প্রতি একাডেমীর তরুণ ফুটবলার মিনহাজুল করিম স্বাধীনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিভাগের দল এথলেটিকো ভিলা স্যান কার্লোস ক্লাব।
শামস্-উল-হুদা ফুটবল একাডেমির পরিচালক (প্রশাসন) শামস্-উল-বারী শিমুল বলেন, স্বাধীনকে স্যান কার্লোস ক্লাবের সাথে অনুশীলনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পত্রাকারে দেয়া হয়েছে। আগামী ১৫ আগস্টের মধ্যে স্বাধীনকে যোগ দিতে হবে আর্জেন্টাইন ক্লাবে। তিনি আরো বলেন, স্যান কার্লোস ক্লাবের সাথে স্বাধীনের যোগাযোগ শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ট্রেইনার অ্যারিয়েল কোলম্যানের মাধ্যমে। তিনি একজন আর্জেন্টাইন। কোলম্যান শামস্-উল-হুদা একাডেমী পরিদর্শনে এসেছিলেন। স্বাধীনসহ মোট ৫জনে খেলা দেখে মুগ্ধ হন তিনি। তার উদ্যোগে পাঠানো স্বাধীনের ভিডিও নজর কাড়ে স্যান কার্লোস ক্লাব কর্মকর্তাদের।
২০১১ সালে সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগে যাত্রা শুরু করে যশোর শামস্-উল-হুদা ফুটবল একাডেমি। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান নাসের শাহরিয়ার জাহেদী। একাডেমি সূত্রে জানাযায়, শামস্-উল-হুদা ফুটবল একাডেমি প্রতিষ্ঠা থেকে ১৫জন ফুটবলার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আংশগ্রহণ করেছেন।
২০২১ সালে কাতার ও নেপালে খেলেছে রিমন হোসেন এবং রয়েল, ২০১৮ ও ২০১২ সালে কাতার ও নেপালে খেলেছে স্বাধীন (বড়), ২০১৬ ও ২০১৮ সালে নেপালে খেলেছে মান্নাফ রাব্বি, ২০১৩ সালে নেপালে খেলেছে জাহাঙ্গীর আলম সজীব, ২০১৩ সালে নেপালে খেলেছে সাইদুর রহমান সাঈদ, ২০১৩ সালে মায়ানমারে খেলেছে রাজা শেখ, ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে মালয়েশিয়া, নেপাল ও কাতারে খেলেছে আরিফ হোসেন লাল, ২০১৬ সালে মালয়েশিয়া খেলেছে মেহেদী হাসান ফাহাদ, ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে মালয়েশিয়া, নেপাল ও কাতারে খেলেছে মিরাজ মোল্লা এবং মিনহাজুল করিম স্বাধীন, ২০১৭ সালে নেপালে খেলেছে নাহিয়ান আকন, ২০১৮ সালে নেপাল ও থাইলান্ডে খেলেছে আলিম, ২০১৮ সালে কাতারে খেলেছে মেহেদী হাসান।
স্বাধীন বয়সভিত্তিক ফুটবলের পরিচিত মুখ। ২০২২ সালে বাফুফে অনূর্ধ্ব-১৮ লিগের চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের হয়ে খেলেছেন। আগামী মৌসুমে শেখ জামালের মূল দলে শামস্-উল-হুদা ফুটবল একাডেমির পাঁচজন ফুটবলারের নিবন্ধন হওয়ার কথা। তাদের একজন স্বাধীন। তিনি বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ঐতিহ্যবাহী ঢাকা ওয়ান্ডারার্সে হয়ে খেলেছেন ২০২১ সালে। সেখানে ছয় গোলের সাথে আট এসিস্ট করে সবার নজর কাড়েন।
২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৮ ক্লাব ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ঢাকা আবাহনী ক্রীড়া চক্র লিমিটেড। সেই আসরে আবাহনীর হয়ে খেলেছিলেন শামস্-উল-হুদা ফুটবল একাডেমির নয়জন ফুটবলার, যাদের একজন স্বাধীন। বলা যায়, আবাহনীর জার্সিতে যুব ক্লাব ফুটবলের শিরোপা জিতেছিল যশোরের শামস্-উল-হুদা ফুটবল একাডেমি। স্বাধীন ২০১৬ সালে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৪ সুপার মখ কাপে বাংলাদেশের হয়ে খেলেছেন। ছিলেন ২০১৭ সালের নেপালের মাটিতে আয়োজিত অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ দলে। খেলেছেন ২০১৮ সালে কাতারে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ আসরে।
মিনহাজুল করিম স্বাধীন বলেন, আমার কাছে পুরো বিষয়টা স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। আমি নিজে ছোটবেলা থেকে আর্জেন্টিনা আর লিওনেল মেসির ভক্ত। আর্জেন্টিনায় আমি ফুটবল অনুশীলন করতে যাব, এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কি হতে পারে। একাডেমী কর্তৃপক্ষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
শামস্-উল-হুদা ফুটবল একাডেমি হেড কোচ কাজী মারুফ বলেন, স্বাধীন কয়েক বছর ধরেই বয়সভিত্তিক ফুটবলে নিজেকে প্রমাণ করে আসছে। তিনি তুখোড় উইঙ্গার। একদিন বাংলাদেশের সেরা উইঙ্গার হওয়ার সম্ভাবনা তার মধ্যে রয়েছে।