সমাজের কথা ডেস্ক : দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতি নিয়ে নিজের খারাপ লাগার কথা জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, আমরা মানুষকে ধৈর্য ধরতে বলি। কিন্তু সাধারণ মানুষের পক্ষে ধৈর্য ধরা কঠিন।
তিনি বলেন, এক হাজার টাকা নিয়ে বাজারে গেলে অল্প কিছু বাজার করা যায়। আমিও সেটা টের পাই, আপনারা সবাই টের পান। আমিও তো বাজারে যাই, আমারও দুঃখ লাগে। সাধারণ মানুষের জ্বালা আছে, তারা সেটা বিভিন্নভাবে প্রকাশ করেন।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। দেশ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে অর্থ মন্ত্রণালয়।
অর্থ সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারক, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানকে সঙ্গে নিয়ে এদিন সংবাদ সম্মেলনে আসেন অর্থ উপদেষ্টা।
ব্যাংক ও বিমাখাতের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, অনেকগুলো বিমা কোম্পানি আছে গ্রাহককে প্রিমিয়ামের টাকা দেয় না, টাকা আত্মসাৎ করে। জীবন বিমা, সাধারণ বিমার সমস্যা আছে। এগুলো আমরা জানি। কিন্তু সমস্যাগুলো এত ব্যাপক, চট করে সমাধান করা যাবে না।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি আমাদের পীড়া দেয়। আরেকটা সমস্যা জ্বালানির দাম। আপনারাও জানেন আদানির (ভারতীয় কোম্পানি) একটা দাবি ছিল ৭০০ মিলিয়নের। আদানিকে ২০০ মিলিয়ন দেওয়া হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশনের পাওনা বকেয়া ছিল, ওরা বলেছে সার দেওয়া বন্ধ করে দেবে। বকেয়া পরিশোধ করার পর এখন সার দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, প্রায় ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ছিল বকেয়া পাওনা। এটিকে কমিয়ে এনেছি। এখন ৪০০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া পাওনা আছে। এক টাকাও রিজার্ভ থেকে খরচ করা হয়নি। আগে রিজার্ভ ছিল ৪২ বিলিয়ন ডলার, হুট করে ১২ বিলিয়ন ডলারে নেমে যায়। আর্টিফিসিয়ালি রিজার্ভ দেখানোর চেষ্টা করা হয়। এগুলো অকল্পনীয় বিষয়।
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, মূল্যস্ফীতি একদিনে হয়নি। মূল্যস্ফীতি কমপ্লেক্স ফ্যাক্টর (জটিল বিষয়)। আগে ৬০ হাজার কোটি টাকা ছাপিয়েছেন। তারপর পাবলিক সেক্টরে বড় বড় প্রজেক্টে খরচ করেছেন, ওটার আউটপুট তো আসে না। পদ্মা সেতুর যাত্রা শুরু হয়েছে, এটির সুফল দক্ষিণবঙ্গ পাঁচ বছর পর পাবে।
তিনি বলেন, আমাদের সাপ্লাই চেইনটা এখন ঠিক রাখতে হবে। আমরা এনবিআর থেকে পেঁয়াজের শুল্ক কমিয়ে দিয়েছি। আলুর শুল্ক কম। চিনির শুল্ক কমানো হয়েছে। কয়েকদিন আগে চালের শুল্কও কমানো হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমরা সার, চাল, ডাল, সয়াবিন তেল, রোজার খেজুরের নিশ্চয়তার ব্যবস্থা করেছি। এসবের জন্য এলসি মার্জিন জিরো (শূন্য) করে দিয়েছি।