সমাজের কথা ডেস্ক : সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, ১৯৭১ সালের নয় মাসব্যাপী যুদ্ধে পৃথিবীর সমস্ত নিষ্ঠুরতা—নির্মমতাকে হার মানিয়েছিল। যুদ্ধে এমন বহু পরিবার আছে যার কাউকেই বাঁচতে দেয়া হয়নি। এখন কেউ কেউ প্রশ্ন করে, মুক্তিযুদ্ধে কি আসলেই ৩০ লক্ষ্য শহীদ হয়েছে? এই প্রশ্নটি শহীদদের প্রতি অবমাননাকর।
৩০ সেপ্টেম্বর বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে গণহত্যা জাদুঘর ‘১৯৭১: গণহত্যা—নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর’ এর উদ্যোগে ‘বাংলাদেশ গণহত্যা স্মরণ ও মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ : বহুমাত্রিকতার খোঁজে’ শীর্ষক দিনব্যাপী একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।
সম্মেলনে জাতীয় সঙ্গীত দিয়ে শুরু হওয়ার পর গণহত্যা জাদুঘরের নতুন ওয়েবসাইট উদ্বোধন, নতুন প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন এবং জাদুঘরে স্মারক হস্তান্তর করা হয়।
গণহত্যা জাদুঘরের ট্রাস্টি সম্পাদক ড. চৌধুরী শহীদ কাদেরর সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ভারতের আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ড. সজল নাগ, স্বাগত বক্তব্য দেন— আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন কমিটির আহ্বায়ক কবি তারিক সুজাত। এছাড়াও আগত অথিতিদের পক্ষে বক্তব্য দেন— ভারতের কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এসময় কে এম খালিদ বলেন, পৃথিবী একটি দেশের স্বাধীন হওয়ার জন্য এত রক্ত কখনো দেখেনি। গোটা দেশ সেই নয় মাসে রক্তের হোলিখেলা দেখেছে। সমস্ত দেশের আনাচে—কানাচে লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা কারা হয়েছে। কী নিদারুণভাবেই না মানুষদের হত্যা করা হয়েছে!
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পুরো বাঙালি জাতি যুদ্ধে নেমে পরে। কিন্তু বর্তমানে জাতির পিতাকে নিয়ে সমালোচনা করা হয়। ভারতে মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে তো কোনো প্রশ্ন উঠে না, দক্ষিণ আফ্রিকায় নেলসন ম্যান্ডেলাকে নিয়ে তো কোনো প্রশ্ন উঠে না। তাহলে আমাদের জাতির পিতাকে নিয়ে সমালোচনা কেন?
<< আরও পড়ুন >> মনকে সুন্দর ও সজীব করে তোলে সাহিত্য
রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব, জাতীয় পতাকা এবং জাতির পিতার বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের রাষ্ট্র, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় পতাকা আর আমাদের জাতির পিতা এই বিষয়গুলো নিয়ে কোথাও কোনো বিতর্ক সহ্য করা হবে না। এসময় সকলকে যার যার জায়গা থেকে নিজের দায়িত্বটুকু পালনেরও আহ্বান জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে গণহত্যা জাদুঘরের সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, আমার কাছে মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে যখন পাকিস্তানিরা এসে একজন কিশোরকে বলতে বলে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ তখন সে বলে ‘জয় বাংলা’ এবং যখন তাকে গুলি করা হচ্ছে সে লুটিয়ে পড়ছে তারপরেও বলছে ‘জয় বাংলা’। আমরা হলাম সেই প্রজন্মের মানুষ। সেকারণে যখনই স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি যখন আস্ফালন করেন তখন বলি, তাদের বিরুদ্ধে ‘জয় বাংলা’ বলে প্রতিশোধ নিন।