ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য পাচারের অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের আন্দোলনের মুখে তিন দিনের ছুটি নিয়ে কর্মস্থল ছাড়লেন ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলাম। এ ছাড়া ঝিনাইদহ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুর রহমান ও ঝিনাইদহ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফরিদকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রবিবার দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠকরা জেলা প্রশাসকের দুর্নীতি, দলীয়করণ, ঘুষ বাণিজ্য ও অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য পাচারের অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক ও শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেন তারা। ছাত্রদের তোপের মুখে তিন দিনের ছুটির আবেদন করে কর্মস্থল ত্যাগ করেন। এরপর ছাত্ররা ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার আজিম উল আহসানের সঙ্গে দেখা করে সদর সার্কেলে কর্মরত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুর রহমান, সদর থানার এসআই ফরিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে তাদের অপসারণের দাবি জানান। দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাদের সরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন পুলিশ সুপার। আশ্বাস পেয়ে সেখান থেকে ফিরে যান ছাত্ররা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপদেষ্টা সাকিব আল হাসান, সমন্বয়ক আবু হুরায়রা, সাইদুর রহমান, এলমা খাতুন, রত্না খাতুন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি এস এম সোমেনুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাহেদ আহমেদ, ছাত্রদল নেতা ইমরান হোসেন ও বখতিয়ার মাহমুদ প্রমুখ।
সমন্বয়ক আবু হুরায়রা বলেন, ‘এস এম রফিকুল ইসলাম ২০২৩ সালের ৩ এপ্রিল ঝিনাইদহে জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদানের পর থেকে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে যোগসাজশে দুর্নীতি, দলীয়করণ, ঘুষ-বাণিজ্য করে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতাল, কালেক্টরেট স্কুলে শিক্ষক নিয়োগসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ আছে। সর্বশেষ অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য নানাভাবে পাচার করছিলেন। এসব বিষয়ে তাদের কাছে অভিযোগ থাকায় ওই কর্মকর্তার অপসারণ চেয়েছেন। এ ছাড়া পুলিশের দুই কর্মকর্তা সব সময় ছাত্রলীগের পরিচয় দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করতেন। এ কারণে তাদেরও অপসারণ চেয়েছে ছাত্র-জনতা।’
এ বিষয়ে জানার জন্য জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলামের মোবাইল নম্বরে কল দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক রথীন্দ্র নাথ বলেন, ‘জেলা প্রশাসক তিন দিনের ছুটি চেয়ে কমিশনারের কাছে আবেদন দিয়ে চলে গেছেন।’