১৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২রা আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
গোল্ড নাসির
আটক এড়াতে ‘আয়নাবাজি’ করেছিলেন গোল্ড নাসির

লাবুয়াল হক রিপন : যশোরে ৯ কোটি টাকার স্বর্ণের বার উদ্ধার মামলার মূল আসামি গোল্ড নাসির নিজেকে রক্ষা করতে আয়নাবাজির আশ্রয় নিয়েছিলেন। ওই মামলার আসামি শনাক্তকালে নাসির নামে পুটখালি গ্রামের আরেক যুবকের নাম অন্তর্ভুক্ত করায়ে আড়ালে চলে যান গোল্ড নাসির। এ কাজে তিনি পোর্ট থানা পুলিশের এক কর্মকর্তাকে ব্যবহার করেন। যিনি মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে ভুল তথ্য সরবরাহ করেন। এত কিছুর পরেও কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না তার। গত শনিবার বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-গুলিসহ তিনি র‌্যাবের হাতেই আটক হয়েছেন।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি যশোর সদরের রাজারহাট এলাকা থেকে ৯ কেজি চোরাই স্বর্ণসহ একটি প্রাইভেটকার জব্দ করে বিজিবি। সোনার বার উদ্ধারের ঘটনায় গোল্ড নাসিরের নামে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করে বিজিবি। গোল্ড নাসির উদ্দিন পুটখালীর বুদো সরদারের ছেলে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ৪৯ ব্যাটালিয়ন বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)এর হাবিলদার জয়নাল আবেদিনের নেতৃত্বে একটি দল যশোর সদর উপজেলার রাজারহাট এলাকায় টহল ডিউটি করছিলেন।

এমনই সময় জানতে পারেন খুলনার দিক থেকে চোরাই সোনার বার নিয়ে একটি প্রাইভেটকার যশোরের দিকে আসছে। এসময় রাজারহাটের রামনগরস্থ মাহবুব ব্রাদার্সের ডিপোর সামনে অবস্থান করে বিজিবি। কিছুক্ষণ পরই খুলনার দিক থেকে আসা (ঢাকা মেট্রো-গ-৩৫-৯৫৭৭) নম্বর প্রাইভেটকারটি দেখে থামতে সংকেত দেয়া হয়। পোশাক পরিহিত বিজিবির সদস্যদের দেখে দ্রুত চালিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে চালক। কিন্তু বেপরোয়া গতিতে চালানো গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে দুমড়ে মুচড়ে যায়। এরই মধ্যে গাড়িতে থাকা চালক তথা মালিক সফিক এবং চোরাচালান স্বর্ণের মালিক নাসির উদ্দিন পালিয়ে যায়। পরে গাড়িটি তল্লাশি করে ৮ কেজি ৯৭৪ গ্রামের ৪২টি বার আনুমানিক ৯ কোটি ৯২ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।

এই ঘটনায় বিজিবির হাবিলদার জয়নাল আবেদিন বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় সোনা চোরাচালানী নাসির উদ্দিন ও চালকের বিরুদ্ধে ১৫ ফেব্রুয়ারি মামলা করেন। এই মামলার মূল আসামি এবং স্বর্ণের মালিক পুটখালী গ্রামের বুদো সরদারের ছেলে নাসির উদ্দিন। কিন্তু নাসির উদ্দিন নিজেকে রক্ষা করতে একই গ্রামের ইমাদুল হক ইমাদ সরদারের ছেলে নাসির উদ্দিনকে এই মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে।

একটি সূত্র জানিয়েছে, এই মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক জিয়াউর রহমান নাম-ঠিকানা যাচাইয়ের জন্য বেনাপোল পোর্ট থানায় বার্তা প্রেরণ করেছিলেন। ওই বার্তায় বুধো মোড়লের ছেলে স্বর্ণ চোরাচালানী নাসির উদ্দিনকে সনাক্ত করার সময় বেনাপোল পোর্ট থানার এসআই তৌফিকুর রহমান নাম ঠিক রেখে পিতার নাম বুধো মোড়লের স্থলে ইমাদুল হক উল্লেখ করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। যাতে করে মামলার মূল আসামি এবং মূল স্বর্ণ চোরাচালানী নাসির উদ্দিন ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে যায়।

এই ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক জিয়াউর রহমান বলেছেন, প্রকৃত সোনা চোরাচালানী বুদো মোড়লের ছেলে নাসিরকে সনাক্ত করা এবং তার সম্পর্কে জানার জন্য বেনাপোল পোর্ট থানায় বার্তা প্রেরণ করা হয়েছিল। কিন্তু মূল সোনা চোরাচালানীর পরিবর্তে একই গ্রামের ইমাদুল হকের ছেলে নাসিরের তথ্য প্রদান করেছেন পোর্ট থানার এসআই তৌফিকুর রহমান। তার রিপোর্টের কারণে আসামি বদলে যায়। ইমাদুল হকের ছেলে নাসির হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিনও নিয়েছেন।

এত কিছুর পরেও শেষ রক্ষা হয়নি নাসিরের। গত শনিবার গোল্ড নাসিরকে অস্ত্র-গুলিসহ আটক করেছে র‌্যাব। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয় ৭টি আগ্নেয়াস্ত্র। অস্ত্র মামলায় আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে। বর্তমানে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি আছেন নাসির।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram