পাঁচ বছরে দশ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চাই— এমন দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বৃহস্পতিবার ভারতের হাইকমিশনারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্র ভারত পাশে থেকেছে। ভারতের হাইকমিশনারের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তেও পাশে থাকবে ভারত। বিগত পাঁচ বছরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি আইসিটি সেক্টরে অনেক সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখিয়েছেন।
আমাদের প্রত্যাশা, আগামী ৫ বছরে স্বপ্নপূরণে তরুণ এ প্রতিমন্ত্রী যথেষ্ট সক্রিয় ও আন্তরিক থাকবেন। তাহলে প্রতিবছর দুই লাখ করে না হোক, অন্তত এক লাখ করে পরিপূর্ণ বা পূর্ণাঙ্গ (আংশিক নয়) কর্মসংস্থানও যদি সৃষ্টি হয়, তবে সেটিও হবে বড় প্রাপ্তি।
দেশের প্রথম ক্যাম্পাসভিত্তিক আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরের নামকরণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুপুত্র শেখ কামালের নামে। ভবিষ্যতে প্রতিটি জেলায় স্থাপন করা হবে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার। এর উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, সরকার শিক্ষায় বিনিয়োগকে ব্যয়ের পরিবর্তে সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করেছে।
বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানভিত্তিক প্রজন্ম তৈরিই সরকারের অভিপ্রায়, যাতে নতুন প্রজন্ম সমগ্র বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে। ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ হবে সাশ্রয়ী, প্রযুক্তিনির্ভর. টেকসই, বুদ্ধিভিত্তিক, জ্ঞানভিত্তিক এবং উদ্ভাবনী বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মানুষ স্বপ্ন দেখছে এক নতুন উজ্জীবিত সমীহ জাগানো স্মার্ট বাংলাদেশের। সে জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।
সময়টা এখন প্রযুক্তির। কম্পিউটার শিক্ষা যার নেই, তাকে শুধু চাকরির বাজারই নয়, আধুনিক সমাজও করুণা করে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীরই স্বপ্ন থাকে, সে এমন একটি বিষয়ে জ্ঞানার্জন করবে, যাতে শিক্ষাশেষে সে কর্মস্থল খুঁজে পায়। সম্মানজনক একটি পেশা বেছে নিতে পারে। সোজা কথায় চাকরি বা শ্রমবাজারে সেবা দেওয়ার বিষয়টি তার বিবেচনায় থাকে। এককালে ডাক্তার—ইঞ্জিনিয়ার পড়ার আগ্রহ ছিল বেশি।
বিশেষ করে মেধাবী ও বিজ্ঞানশিক্ষায় শিক্ষিতরা ওই দুটি বিষয় বেছে নিত ভবিষ্যতে একজন চিকিৎসক কিংবা প্রকৌশলী হবে বলে। যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে কর্মবাজারেও পরিবর্তন এসেছে। ফলে, ওই দুটি বিষয়ের সমান্তরালে ব্যবসা শিক্ষারও কদর বাড়ে।
স্নাতক পর্যায়ে বিবিএ—এমবিএর চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। শুধু ব্যাংকিং সেক্টর নয়, প্রতিটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেই বিবিএ—এমবিএ ডিগ্রিধারীদের কদর বিস্ময় জাগানো। বিগত এক দশকে দেশের ডিজিটাল সেক্টর প্রভূত উৎকর্ষ লাভ করার প্রেক্ষিতে এখন শিক্ষার্থীরা বুঝতে পেরেছে, প্রযুক্তি শিক্ষার দিনই সামনে।
সে বিষয়ে শিক্ষালাভ করলে সহজেই যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পেশাজগতে অবদান রাখার পথ সুগম হবে। এখন উন্নত বিশ্বে ব্যবসা ও মানবিক শিক্ষায়ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্তি ঘটেছে। আমাদের দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে এদিকটায় বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া দরকার। ক্যাশলেস যুগে ব্যবসাবাণিজ্য, ব্যাংকিং প্রযুক্তিনির্ভর হলেও পাঠ্যসূচিতে তেমন পরিবর্তন আসেনি। সময় এসেছে এ বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করার। তা না হলে পিছিয়ে পড়ব আমরা।