অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি : যশোরের অভয়নগরে কৃষি অফিসের দেওয়া প্রণোদনার ধানের বীজে ভেজালের অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই বীজে তিন ধরণের ধান হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষক। সুষ্ঠ তদন্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সরকারিভাবে ক্ষতিপূরণ পেতে পারে সে আশায় রোববার দুপুরে তারা উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের মধ্যপুর গ্রামের কৃষকদের মাঝে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর কর্তৃক প্রণোদনার আওতায় বোরো ধানের বীজ ও সার প্রদান করা হয়। প্রাপ্ত বীজ রোপণের পর যথাযথ পরিচর্যাও করা হয়। বর্তমানে ওই ধানের বীজ থেকে কিছু ফসল পাকতে শুরু করেছে। একই বয়সি কিছু গাছে সবে কাঁচা ধান এবং কিছু ধানে থোড় আসছে। এ কারণে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষক।
রোববার বিকেলে মধ্যপুর গ্রামে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক গোলাম সরোয়ার বলেন, দুই বিঘা জমিতে প্রণোদনার ধান বীজ রোপণ করেছিলাম। তিন থেকে চার মাসের মধ্যে ভালো ফলন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন ক্ষেতের ধানে তিন অবস্থা। কিছু পাক ধরেছে, কিছু কাঁচা এবং কিছু নতুন হচ্ছে। জমির ইজারা খরচ, কৃষি শ্রমিকের মজুরি, ফসল রক্ষণাবেক্ষণসহ অন্তত ৬০ হাজার খরচ হয়েছে। ভেজাল বীজের কারণে চরম ক্ষতি হয়েছে।
কৃষক সামছুর মল্লিক, নজরুল ইসলাম, মিঠু মোল্যাসহ অন্যান্য কৃষকরা বলেন, মধ্যপুর গ্রামে পাশাপাশি ১২ জন কৃষককের প্রায় ১২ বিঘা জমির ধানে একই অবস্থা হয়েছে। এতে প্রায় ৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি পোষাতে ক্ষতিপূরণ ও কৃষি অফিস কর্তৃক এধরনের বীজ প্রদানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলেন, বিষয়টি জানার পর ওই এলাকা পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন বলেন, লিখিত আবেদন পাওয়ার পর উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরামর্শ করে কৃষি কর্মকর্তাকে খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ্ ফরিদ জাহাঙ্গীর বলেন, কৃষি অফিস কর্তৃক প্রণোদনার ধানের বীজে ভেজালের অভিযোগ করেছে কৃষকরা। সত্যতা প্রমাণিত হলে দায়ভার কৃষি কর্মকর্তাকে নিতে হবে। কৃষকের বিরুদ্ধে কোনো অন্যায় মেনে নেওয়া হবে না।