নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরের অভয়নগরের হাবিবুর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে ৪জনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গাঁজা বিক্রির টাকা ভাগাভাগি ও মাদক বিক্রিতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডে ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। মঙ্গলবার হাবিবুরের মৃতদেহ উদ্ধারের পর বুধবার দিনভর অভিযান চালিয়ে ডিবি পুলিশ ওই চারজনকে গ্রেফতার এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে অভয়নগর থানায় প্রেসব্রিফিং করে এ তথ্য জানানো হয়।
গ্রেফতারকৃত চারজন হলেন, অভয়নগর উপজেলার তালতলা মধ্যপুর গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে মেহেদী হাসান (২২), বিভাগদী গ্রামের মোশারফ শেখের ছেলে হুমায়ুন শেখ (২১), আজাহার শেখ ওরফে আজা’র ছেলে ফয়সাল শেখ (২১) ও খন্দকার আনিছুর রহমানের ছেলে খন্দকার আল আমিন (৩০)। হত্যাকা-ের শিকার হাবিবুর রহমান (২৪) অভয়নগর উপজেলার মধ্যপুর তালতলা এলাকার রেজাউল ইসলামের ছেলে।
যশোর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মফিজুল ইসলাম জানান, ২৮ জুলাই বিকালে বন্ধু ইয়াসিনের সাথে বাড়ি থেকে বের হন হাবিবুর। এরপর বাড়ি না ফেরায় হাবিবুর স্ত্রী থানায় নিখোঁজ জিডি করে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। একপর্যায়ে নিখোঁজের দু’দিন পর গত ৩০ জুলাই দুপুরে অভয়নগর উপজেলার বিভাগদী জয়েন্ট ট্রেডিং বালুর মাঠের নীচে ভৈরব নদ থেকে হাবিবুর রহমানের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতের হাত পায়ে বালির ব¯ত্মা বাঁধা ছিল এবং মাথায় ও পেটে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। নিখোঁজ ডায়েরি করার সময় বন্ধু ইয়াসিন থানায় গেলেও লাশ পাওয়ার পর সে লাপাত্তা হয়ে যায়। হত্যাকা-ের ঘটনায় নিহতের পিতা রেজাউল ইসলাম বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এরপর ডিবি পুলিশের একটি দল ঘটনা তদšেত্ম নেমে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অপরাধীদের সনাক্ত করে বুধবার হত্যার মিশনে অংশ নেওয়া চারজনকে গ্রেফতার করে। পরে আসামিদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক ঘটনাস্থলের আশপাশে জঙ্গল ও নদের পানির মধ্যে থেকে উদ্ধার করা হয় হত্যা কাজে ব্যবহৃত ২ টি ক্রিকেট স্ট্যাম্প ও জিআই পাইপ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ডিবি পুলিশকে জানিয়েছে, নিহত হাবিবুর একজন মাদকদ্রব্য (গাঁজা) বিক্রেতা। বন্ধু ইয়াসিন তার সহযোগী ছিল। মাদক বিক্রির টাকা ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বিরোধ এবং মাদক বিক্রির একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে ইয়াসিন তার মাদকসেবী ৭/৮ জন বন্ধুর সাথে হাবিবুরকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
ঘটনার দিন মাদক ক্রয়ের জন্য হাসানের মাধ্যমে ২৮ জুলাই সন্ধ্যা রাতে বালুর মাঠে ডেকে নিয়ে রাত ৮টার দিকে ইয়াসিন তার হাতে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে গলায় আঘাত করে। অন্যান্যরা স্ট্যাম্প দিয়ে আঘাত করে নদীর পানিতে ফেলে ইয়াসিন জিআই পাইপ দিয়ে মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে ব¯ত্মা সংগ্রহ করে বালু ভরে নিহতের হাত পায়ে ব¯ত্মা বেঁধে পেটের নাড়িভুঁড়ি বের করে পানিতে ডুবিয়ে দেয়। ঘটনার মূল হোতা ইয়াসিনসহ অন্যদের গ্রেফতার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন এসআই মফিজুল ইসলাম।