দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ২৯৮টির বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এসব আসনের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ২২২টি, জাতীয় পার্টি ১১টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ এবং বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি একটি করে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসনে বিজয়ী হয়েছেন।
এ ফলাফল বলে দিচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা ৫ম বারের মত প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। অনেক বাধার মুখে দলীয় সরকারের অধিনে অনুষ্ঠিত নির্বাচন সুষ্ঠ হওয়ায় প্রশংসা পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইতোমধ্যে অভিনন্দন জানিয়েছেন চীন, ভারত রাশিয়াসহ অন্তত ১৪টি দেশের প্রতিনিধিরা।
আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয়ী হওয়ায় দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্ব—স্ব দেশের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানান রাষ্ট্রদূতরা। তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এসময় প্রধানমন্ত্রীও তাদের ধন্যবাদ জানান এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন—অগ্রযাত্রায় সহযোগিতা কামনা করেন। আওয়ামী লীগের সভানেত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন ভুটানের চতুর্থ রাজা জিগমে সিগমে ওয়াংচুক।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে দেশের জন্য ও গণতন্ত্রের জন্য এটা যুগান্তকারী ঘটনা বলে উলে¬খ করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আরও বলেছেন, নির্বাচনটা যে অবাধ, সুষ্ঠু হতে পারে সেই দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করতে পেরেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি অনেকবারই নির্বাচন করেছি। সেই ১৯৮৬ সাল থেকে আট বারই আমার নির্বাচন করা হয়ে গেছে। তবে এত মানুষের আগ্রহ আগে দেখেনি। আমি মনে করি বাংলাদেশের জনগণ অনেক আনন্দিত এবং নির্বাচন যারা পর্যবেক্ষণ করেছেন, মতামত দিয়েছেন, সেটা উপযোগী। সেই জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।
নির্বাচনের এই বিজয়কে ‘জনগণের বিজয়’ উলে¬খ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, এ বিজয়টা আমার বিজয় না। আমি মনে করি জনগণের বিজয়। কারণ এখানে জনগণের যে অধিকার আছে, সরকার গঠন করবার ক্ষমতা আছে তাদের হাতে। যেটা নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন সংগ্রাম করেছি জনগণের ভোটের অধিকার সেটা তারা নিজেরা প্রয়োগ করবে, সেটা সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। নির্বাচন হয়ে গেছে, এখনও গেজেট হয়নি। তাই আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। সম্পূর্ণ ফলাফল আসলে গেজেট হবে, তখনই শপথ হবে। এরপর আমাদের সংসদীয় দলের বৈঠক করতে হবে। সেখানে সংসদীয় দলের নেতা কে হবেন সেটা নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা সেটা নির্বাচিত করবেন। মেজরিটি পার্টি যাকে নির্বাচিত করবেন তিনিই হবে সংসদীয় দলের নেতা। তখন সরকার গঠন করতে রাষ্ট্রপতির কাছে যেতে হবে, সরকার গঠন হবে। এটাই সংবিধানিক প্রক্রিয়া, তা অনুসরণ করতে চাচ্ছি।
আমরা মনে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনার ৫ম বারের মত ক্ষমতায় আসা দেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য কল্যাণ হয়েছে। মানুষের অধিকারটা আরও সুরক্ষিত হয়েছে। এ নির্বাচন আমাদের গণতান্ত্রিক বিধি ব্যবস্থাকে আরও মজবুত করবে, শক্তিশালী করবে বলে বিশ্বাস করেন প্রধানমন্ত্রী। আমরাও প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বাসে বিশ্বাসী। দেশের অভূতপূর্ব কল্যাণ হবে এ প্রত্যাশা রাখতে চাই।