২১শে মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
অগ্নিঝুঁকিপূর্ণ ভবন
246 বার পঠিত

বেইলি রোডের ট্র্যাজেডির পর একদিকে প্রশাসন যেমন নড়েচড়ে বসেছে, তেমনি এ নিয়ে চলছে নানামুখী বিশে¬ষণ। রাজধানীর গুলশান, ধানমণ্ডি, মিরপুর ও উত্তরার প্রায় অর্ধশত রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। অভিযানে কয়েকটি রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাপক, কর্মীসহ অন্তত ২২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, নগরবাসীর নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় রেখে এসব রেস্তোরাঁ ও ভবনে জরুরি বহির্গমন সিঁড়ি ও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা রয়েছে কি না, তা দেখতেই অভিযান চালানো হয়। এই অভিযান ঢাকাবাসীর প্রশংসা পাবে।

কিন্তু অননুমোদিতভাবে ভবনের নকশা বদলে রেস্টুরেন্টের আধিক্য বহুল বাণিজ্যিক ভবনের মালিকদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। ফায়ার সাির্র্ভসের তথ্য অনুযায়ী দেখা যায়, ঢাকায় অধিকাংশ ভবনেই রয়েছে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি। ঝুঁকিতে থাকা প্রায় অর্ধেক ভবনই হলো বিপণি বিতান। অতি ঝুঁকিপূর্ণ বিপণি বিতান তথা মার্কেটগুলোর বেশিরভাগ রাজধানীর পুরনো ঢাকা এলাকায়। এগুলোর মাঝে উলে¬খযোগ্য হলো— নিউমার্কেট এলাকার গাউছিয়া মার্কেট, ফুলবাড়িয়ার বরিশাল প¬াজা, টিকাটুলীতে অবস্থিত রাজধানী সুপারমার্কেট, লালবাগের আলাউদ্দিন মার্কেট।

ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হলে ভবনের ভাড়াটিয়া নয়, ভবন মালিকদের অনিয়ম—অব্যবস্থাপনাই বড় করে দেখা কর্তব্য। একইসঙ্গে রাজউকের যে সব পরিদর্শককে মাসোহারা দিয়ে এসব হোটেল—রেস্তারাঁ অবৈধভাবে চালু ছিল, সেগুলোর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। কয়েকজন ভবন মালিক ও ঘুষখোর পরিদর্শককে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারলে বাকিরা সাবধান হয়ে যাবে। মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান প্রশ্ন তুলেছেন, এত মানুষের জীবনের চেয়েও তারা প্রভাবশালী কিনা যারা বেইলি রোডের ভবনটিতে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রভাব বিস্তার করেছিলেন।

আইনে বলা আছে, ঢাকা মহানগরে বহুতল ভবন নির্মাণে ফায়ার সার্ভিস থেকে অনাপত্তির ছাড়পত্র নিতে হবে। ভবনের সামনে সড়কের প্রশস্ততা, নকশা অনুসারে ভবনের অগ্নিনিরাপত্তা পরিকল্পনা, ভবন থেকে বের হওয়ার বিকল্প পথ, কাছাকাছি পানির সংস্থান, গাড়ি ঢুকতে পারবে কি নাÑ এসব বিষয় পর্যবেক্ষণ করে ছাড়পত্র দেয় ফায়ার সার্ভিস। এই ছাড়পত্র দেখিয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) থেকে ভবনের নকশার অনুমোদন নিয়ে নির্মাণকাজ শুরু করতে হয়।

ফায়ার সার্ভিস বলছে, ভবন নির্মাণের পর অধিকাংশ মালিক বা কর্তৃপক্ষ ফায়ার লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেন না। ভবন নির্মাণের আগে অগ্নিনিরাপত্তার জন্য যে পরিকল্পনা করা হয়, পরে সেটি বাস্তবায়ন করা হয় না বলেই লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেন না তারা। সুতরাং এটি পরিষ্কার যে, ভবন মালিকরাই তাদের ভবন অগ্নিঝুঁকির্পূণ করে রাখছেন।

আমরা বারবার বলে আসছি, যে কোনো কারণেই হোক কোনো ভবনে আগুন লাগতেই পারে। তাই জরুরি হচ্ছে ভবনে পূর্ণাঙ্গ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা আছে কি না, সেটি নিশ্চিত হওয়া। আগুন লাগলে জরুরি ভিত্তিতে মানুষ ভবন থেকে বের হয়ে আসতে পারবেন কি না, সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। বাণিজ্যিক ভবনে গ্যাস সিলিন্ডার রক্ষণাবেক্ষণেও সর্বোচ্চ সতর্কতা বাঞ্ছনীয়। শক্তিশালী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, যথাযথ নিয়মিত তদারকি এবং আইনের কঠোর প্রয়োগই অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধ, মোকাবিলা ও হ্রাসে ভূমিকা রাখতে পারে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email[email protected]
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram