সমাজের কথা ডেস্ক : কিন্ডারগার্টেনসহ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় তৈরি করা ‘বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বিধিমালা, ২০২৩’ বিধিমালা সম্প্রতি চূড়ান্ত হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হয়েছে বিধিমালাটি। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং শেষে আগামী অক্টোবর মাসের শুরুর দিকে গ্যাজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।
বিধিমালা প্রকাশের পর বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলবে এই বিধিমালার আওতায়। তখন অনুমোদন ছাড়া আর বেসরকারি কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা যাবে না।
জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, ‘বিধিমালার খসড়া চূড়ান্ত করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং শেষ হলে গ্যাজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।’
কবে নাগাদ গ্যাজেট প্রকাশ হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আর এক সপ্তাহ লাগতে পারে। আগামী মাসের শুরুতে (অক্টোবর) গ্যাজেট প্রকাশ করা সম্ভব হবে। গ্যাজেট প্রকাশ হলেও সংশ্লিষ্ট সব পর্যায়ে বিধিমালা বাস্তবায়নের নির্দেশনা যাবে।’
এদিকে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রণীত ‘বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বিধিমালা ২০২৩’ চূড়ান্ত হওয়ার আগেই সংশোধনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ অ্যাসোসিয়েশন। তাদের দাবি— কিন্ডারগার্টেন প্রতিষ্ঠানগুলো ‘কিন্ডারগার্টেন স্কুল’ নামে নিবন্ধন করার ব্যবস্থা থাকতে হবে নীতিমালায়।
এছাড়া শিক্ষক নিয়োগবিধি শিথিল করা অথবা শিক্ষকদের বেতন সরকারি তহবিল থেকে দেওয়া এবং কিন্ডারগার্টেন স্কুল নীতিমালা প্রণয়নে কিন্ডারগার্টেন স্কুলের প্রতিনিধি রাখতে হবে। গত ১৭ সেপ্টম্বর অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে মানববন্ধন কর্মসূচিতে এসব দাবি জানানো হয়।
‘কিন্ডারগার্টেন’ নামেই চালাতে চান স্কুলের মালিকরা— এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, ‘যে নামেই ডাকা হোক, এসব প্রতিষ্ঠান তো বেসরকারি। যে নামই হোক সবগুলোই নীতিমালার আওতায় পরিচালিত হবে।’
মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন পর্যায় থেকে জানা গেছে, প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কীভাবে হবে তা সরকারের বিষয়। এছাড়া দেশে যত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে, সেগুলোতে দেশের প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া নিশ্চিত করা সম্ভব। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করেই নীতিমালা করা হচ্ছে। তাছাড়া কিন্ডারগার্টেনের জন্য আলাদা বিধিমালা তো হতে পারে না।
খসড়া এ বিধিমালার সংজ্ঞায় বলা আছে— ‘বেসরকারি বিদ্যালয়’ অর্থ নার্সারি, কিন্ডারগার্টেন, ও প্রিপারেটরি বিদ্যালয়’। সংজ্ঞা অনুযায়ী নাম যাই হোক সবগুলোই বেসরকারি বিদ্যালয়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ অ্যাসোসিয়েশন জানায়, বাংলাদেশে প্রায় ৫৩ হাজারের বেশি ব্যক্তি মালিকানাধীন কিন্ডারগার্টেন ও এই ধরনের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান শুধু শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন নিয়ে ভাড়া বাড়িতে পরিচালিত হচ্ছে। প্রাক—প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। এর মধ্যে প্রায় আড়াই কোটি শিক্ষার্থী বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত। বিশেষ করে ৫৩ হাজার কিন্ডারগার্টেনে প্রায় ৮ লাখ শিক্ষক এবং প্রায় ৪০ লাখ পরিবার এ সেক্টরের ওপর নির্ভরশীল।